রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের বর্তমান বিভাগীয় প্রধান এবং জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. ইমদাদুল হকের বিরুদ্ধে নিয়োগের শর্ত পূরণ না করেই ১২ বছর শিক্ষকতা করার সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ঘটনা উদ্ঘাটনে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
‘আবেদনের যোগ্যতা নেই, এক যুগ ধরে বেরোবির শিক্ষক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফেরদৌস রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। সদস্যসচিব হিসেবে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহ জামান এবং সদস্য হিসেবে আছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও কলা অনুষদের ডিন ড. শফিক আশরাফ। এই কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করা ইমদাদুল হক ২০১৪ সালে বেরোবিতে দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে তিনি ২০১২ সালে অস্থায়ী ভিত্তিতে (অ্যাডহকে) শিক্ষক হিসেবে ওই বিভাগে নিয়োগ পান।
তবে তার আবেদনের সময় জমা দেওয়া কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি আবেদনের প্রাথমিক শর্তই পূরণ করেননি। এই পদে আবেদন করতে হলে যেসব শর্ত পূরণ করতে হতো, তার মধ্যে অন্যতম ছিল, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের যেকোনও একটিতে ৪.০০ ভিত্তিক স্কেলে কমপক্ষে ৩.৫০ সিজিপিএ থাকতে হবে অথবা ডিভিশন ভিত্তিক পদ্ধতিতে প্রথম শ্রেণি থাকতে হবে। এসএসসি বা এইচএসসির যেকোনও একটিতে ন্যূনতম প্রথম বিভাগ বা এ গ্রেড থাকতে হবে।
ইমদাদুল হক ২০০৩ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স এবং ২০০৮ সালে একই বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন, যেখানে তার অনার্সে সিজিপিএ ছিল ৩.২৬ এবং মাস্টার্সে ৩.৩৯ (৪.০০ স্কেলে)।
বিজ্ঞপ্তির দ্বিতীয় শর্ত স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের যেকোনও একটিতে ৩.৫০ তিনি পূরণ করেননি। তবে ইমদাদুল হক তার আবেদনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয়টিতেই প্রথম বিভাগ উল্লেখ করেন।
যদিও ২০০১ সাল থেকেই বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গ্রেডিং সিস্টেম চালু হয়। বিশেষ করে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিস্টেম চালু ছিল। ফলে তার অনার্স ও মাস্টার্সের ফলাফল আর ডিভিশন ভিত্তিতে গণ্য হওয়ার কথা নয় বলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান।