চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ৫৬৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় ১৩টি সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সিন্ডিকেট সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সিন্ডিকেটের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো উপস্থাপন করেন।
সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. ৩০ এবং ৩১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় দুষ্কৃতকারী কর্তৃক হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তীব্র নিন্দা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আহত সবার প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি জ্ঞাপন করে।
২. আহত সব শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসা করা এবং ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বহন করা হবে।
৩. উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আহত শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
৪. সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানের স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি মডেল থানা স্থাপন, রেলগেটে নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫. যেসব ভবন এবং কটেজে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন সেসব ভবন এবং কটেজের মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের ঘরভাড়াসহ অন্যান্য অসন্তোষ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে করা হবে।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুটি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় এবং ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করে সরকারের কাছে দাখিলের করা হবে।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় করার লক্ষ্যে ১০তলা বিশিষ্ট পাঁচটি ছাত্র হল এবং পাঁচটি ছাত্রী হল দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডিপিপি প্রস্তুত করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে।
৮. বিদ্যমান আবাসিক হলগুলো সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের বসবাস উপযোগী করা হবে।
৯. বিদ্যমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন রাখা এবং টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে।
১০. ৩০ এবং ৩১ আগস্ট সংঘঠিত ঘটনা তদন্ত করে এর কারণ অনুসন্ধান এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানানো হবে।
১১. ৩০ এবং ৩১ আগস্টের ঘটনা তদন্ত করে এর কারণ অনুসন্ধান, দোষীদের চিহ্নিতকরণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. তৈয়ব চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে সাত একটি কমিটি গঠন করেছে।
১২. বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মত বিনিময় সভা করা হবে।
১৩. এ ঘটনায় স্থানীয় নিরীহ মানুষের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণ করে তা পূরণে সরকারকে অনুরোধ জানানো হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. হাশমত আলী।

















