বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ২৬ পদের মধ্যে দীর্ঘদিন ২২টি শূন্য অবস্থায় রয়েছে। উপজেলার তিন লাখ মানুষের জন্য মাত্র চার জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করায় রোগীদের নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। চিকিৎসকদেরকেও হিমশিম খেতে হয়। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ লিখে দিলেও স্টোরে গিয়ে সব পাওয়া যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ বলছে, সেখানে সব ওষুধ রয়েছে।
এসব সমস্যার কারণে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলাবাসীর দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। তারা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্ব বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় মোট জনসংখ্যা প্রায় তিন লাখ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু এ উপজেলার লোকজন নয়; পার্শ্ববর্তী গাবতলী, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও সাঘাটা উপজেলার বিপুলসংখ্যক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৫০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এ ছাড়া ইনডোরে প্রতিদিন গড়ে ৪৫ থেকে ৬০ জন রোগী বেডে বা বারান্দার বেডে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।
সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ২৬টি পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র চার জন। শুধু চিকিৎসকের ২২ পদ শূন্য থাকায় মাত্র চার জন প্রায় তিন লাখ মানুষের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই প্রয়োজনীয় জেনারেটর। বিদ্যুৎ গেলে পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ সময় রোগী ও সঙ্গে আসা স্বজনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারপাশে ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। সন্ধ্যার পর মশার উপদ্রব বেড়ে অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে নোংরা আবর্জনা ও দুর্গন্ধে রোগীদের নাভিশ্বাস ওঠে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে সমস্যা অনুসারে প্রয়োজনীয় ওষুধ লিখে থাকেন। কিন্তু স্টোর থেকে শুধু প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড, মেট্রোনিডাজল ও হিস্টাসিনসহ কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। বেশিরভাগ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
উপজেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামের মিতালী রানী বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলাম। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে প্রয়োজনীয় একটি ক্রিম লিখে দেন। তবে স্টোরে গিয়ে সেটি পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে চিকিৎসকের নির্দেশে আমাকে ওই ক্রিমটি দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন কবিরাজ বলেন, ‘এখানে বহিরাগত রোগীর প্রচুর চাপ রয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে নতুন চিকিৎসক নিয়োগ হবে। তখনই চিকিৎসকের শূন্যতা কেটে যাবে। সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’