চট্টগ্রামের আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদ্রাসা) নিয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সুন্নি ও কওমি আকিদার লোকজনের মধ্যে এই সংঘর্ষ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ২টা পর্যন্ত চলমান ছিল। দুপক্ষের ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনায় কমপক্ষে দেড় শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন।
দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে দিবাগত রাত ২টার পর সড়ক থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ায় যান চলাচল শুরু হয়। রবিবার সকাল থেকেও যান চলাচল করছে।
স্থানীয়রা জানান, আজ স্বাভাবিকের চেয়ে কম যানবাহন চলাচল করছে। হাটহাজারী বাস স্টেশনসহ সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনীর টিম। মাঠে আছে আর্মড পুলিশ, জেলা পুলিশসহ র্যাব।
সংঘাত এড়াতে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দেন। আজ রবিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে, দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ও ঢিল-ছোড়াছুড়িতে দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত হাটহাজারীতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১৩০ জনের মতো আহতকে হাটহাজারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালে ১০৭ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘হাটহাজারীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক যুবকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফটিকছড়ি থানা পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে আটক করে।
প্রশাসন সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে প্রশাসন দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে। সেখানে সুন্নি জনতার পক্ষ থেকে আটক যুবককে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। অন্যদিকে কওমি পক্ষের লোকজন দাবি করেন, আটক যুবকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবসা নিতে হবে। এ বিষয়ে সুরাহার জন্য আজ রবিবার আবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।

















