Swadhin News Logo
সোমবার , ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

গত এক বছরে পুলিশ একটাও মিথ্যা-গায়েবি মামলা করেনি: অ্যাটর্নি জেনারেল

প্রতিবেদক
Nirob
সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫ ৮:৩৭ অপরাহ্ণ
গত এক বছরে পুলিশ একটাও মিথ্যা-গায়েবি মামলা করেনি: অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান অন্তর্বর্তীকালীন এক বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছেন, ‘গত এক বছরে বাংলাদেশের মাটিতে একজন মানুষও গুমের শিকার হননি। গত এক বছরে বাংলাদেশের মাটিতে পুলিশ একটাও মিথ্যা-গায়েবি মামলা করেনি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। মিথ্যা মামলা হয়নি, সেটা আমরা বলছি না। ভিকটিমের পরিবার মামলা করেছে। সেটার প্রতিকার দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে আমরা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ এর (ক) ধারা সংশোধন করেছি। আমরা বলেছি, মামলার দীর্ঘমেয়াদী তদন্ত চলাকালে যদি কেউ পুলিশ কমিশনার বা এসপির কাছে দরখাস্ত দিয়ে বলে, “আমাকে এই মামলায় গায়েবিভাবে আসামি করা হয়েছে”, তাহলে পুলিশ কমিশনার বা এসপি নিজস্ব তদন্ত সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে সেটার প্রতিকার দিতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে সাংবিধানিক আইনের যে সংকট এখন তৈরি হয়েছে, তার বড় প্রশ্ন হলো আপনি নাগরিক হিসেবে আপনার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য আপনার ভোটের অধিকার কীভাবে নিশ্চিত করবেন। এটাই এখন সবচেয়ে মুখ্য প্রশ্ন।’

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা-২০২৫’ এর রাজশাহী পর্যায়ের চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ভোটের অধিকার হরণ হয়েছিল বলেই বিগত ১৭ বছরে অসংখ্য-অগণিত মানুষ তাদের জীবনের সর্বস্ব হারিয়েছে। আমরা তথ্যচিত্র থেকে পেয়েছি, বিগত ১৭ বছরে ৭০০ এর বেশি মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। বিগত ১৭ বছরে সাড়ে চার হাজারের বেশি মানুষ বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। ১৭ বছরে সময়ে আমার আপনার ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের কথা বলতে গিয়ে ৬০ লাখের বেশি মানুষ রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং গায়েবি মামলার শিকার হয়েছে। যেসব মামলার ৯৯ শতাংশের বেশি বাদী ছিল পুলিশ।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে আমরা দেড় হাজারের বেশি ছাত্র-তরুণকে জীবন দিতে দেখেছি। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। একবার চিন্তা করেনতো তাদের পরিবারের কথা, যারা গুম হয়েছে। যাদের মা এখনও তাহাজ্জুদের নামাজে পাটিতে বসে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন, তার সন্তান যাতে ফিরে আসে, তার লাশটা অন্তত দেখতে পারবেন। এমন একটি রক্তের স্বীকৃতিতে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, সেই বাংলাদেশে স্বপ্ন অনেক থাকবে- সেটাই স্বাভাবিক। তবে স্বপ্নের ডালপালা যেন এমনভাবে তৈরি না হয়, যেই ডালপালা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির বিচার চান। আপনাদের সঙ্গে একমত হয়ে আমি বলতে চাই, আমরা ব্যক্তি নয় বরং অপরাধের বিচার করতে চাই। অপরাধের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত হবে তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সংবিধান নাগরিকদের ইচ্ছার প্রতিফলন। নাগরিক হিসেবে আমি চাই নিঃশঙ্ক চিত্তে বাংলাদেশে বসবাস করতে। আমি চাই ন্যায়বিচার, জীবনের অধিকার, কথা বলার অধিকার, লিখতে পারার অধিকারসহ বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। পক্ষপাতিত্ব নয়, সঠিক সময়ে সঠিক সেবা পেতে চাই যেখানে কোনও স্বেচ্ছাচারিতা থাকবে না। সেজন্য সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রশ্ন আসে।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর আমাদের একটি লক্ষ্য ছিল, আমরা স্বৈরাচার হটিয়ে বাংলাদেশকে জনগণের বাংলাদেশে রূপান্তর করবো। আজ নানা জনের নানা মত লক্ষ্য করছি। সংস্কারের নামে বিভিন্ন প্রস্তাবনা পাওয়া যাচ্ছে। শুধু নিজের প্রস্তাবই সঠিক ভেবে অন্যের প্রস্তাবকে আমরা যেন উপেক্ষা না করি সেটাও ভাবতে হবে। তা না হলে জুলাই চেতনা, সাংবিধানিক ভাবনা ভূলুণ্ঠিত হবে।’

তারুণ্যের স্বপ্ন দিয়ে সবকিছু জয় করা সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা বলেছেন রাইট টু ইনফরমেশন সংবিধানের অংশ হওয়া উচিত। আমি একমত, তবে কীভাবে হবে তা নীতিনির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নিয়ে প্রত্যাশা ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে জুলাই শহিদের রক্তের সঙ্গে কেউ বেইমানি করতে পারবে না। সাংবিধানিকভাবে আমরা এমন একটা যৌক্তিক জায়গায় পৌঁছাতে চাই যেখানে প্রতিটি শহিদের রক্তের মর্যাদা রক্ষিত হবে।’ এ সময় রাজনৈতিক সমঝোতার পথ-পরিক্রমায় একটি আধুনিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ একরামুল হক, উপ-উপাচার্য ড. মো. ফরিদ উদ্দিন খান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. শেখ মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন।
প্রতিযোগিতায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সময়োপযোগী, দূরদর্শী ও কার্যকর নীতি প্রস্তাবে তিন সদস্যবিশিষ্ট পাঁচটি দল অংশগ্রহণ করে। আজকের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জনকারী দলের নাম ছিল ‘টর্চলাইট’। প্রথম রানারআপ হয়েছে ‘দীপশিখা’ এবং দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে ‘চেঞ্জমেকার’ দল। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের হাতে পদক, ক্রেস্ট ও পুরস্কারের চেক তুলে দেন।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত