জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। একইসঙ্গে অনভিপ্রেত যেকোনো ঘটনা এড়াতে প্রবেশপথে অবস্থান নিয়েছেন বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গেটে অবস্থান নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধান ফটক, মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন ফটক, প্রান্তিক ফটক ও বিশ মাইল ফটকসহ প্রতিটি প্রবেশপথে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদেরও কড়া অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের টহল দেখা গেছে৷
নির্বাচন উপলক্ষে আজ ক্যাম্পাসের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ১৫০০ পুলিশ, ৭ প্ল্যাটুন বিজিবি ও ৫ প্ল্যাটুন আনসার ক্যাম্পাসের পরিসীমায় মোতায়েন করা হয়েছে।
বহিরাগত কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে প্রথমেই তাদের থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরপর পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারী কিংবা অনুমোদিত কেউ কি না। বৈধ পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে প্রবেশ করছেন। গেটের বাইরে সাধারণ মানুষ বা বাইরের কেউ ঢুকতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সঙ্গে কথা বলে ফিরিয়ে দিচ্ছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি কিংবা জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়িগুলোই গেট অতিক্রম করতে পারছে।
গেটে দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য বলেন, জাকসু নির্বাচন হচ্ছে। এজন্য ক্যাম্পাসের ভেতরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে—আইডি ছাড়া কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছি।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন যা যা করা দরকার তার সবটুকু করবে।
সব আবাসিক হলের অভ্যন্তরে ক্যানটিন ও দোকান খোলা রাখা এবং পর্যাপ্ত খাবার মজুত রাখার জন্য বলা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগ (নিরাপত্তা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট) ব্যতীত সব মোটরসাইকেল চলাচল নিষেধ করা হয়েছে। এই সময়ে শুধু শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাকার স্টিকার এবং নির্বাচন কমিশনের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। সব স্টাফ বাস প্রান্তিক গেট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবশে করবে।
এবারের জাকসু নির্বাচনে ২৫ পদে ১৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।