চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এবার সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়সহ যাত্রী পরিবহনে রেকর্ড গড়েছে। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিমানবন্দরটি রাজস্ব আয় করেছে ২৭০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩৩ কোটি টাকার বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি, বকেয়া রাজস্ব আদায়ের ফলে এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বিমানবন্দর রাজস্ব আদায় করেছে ২৭০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে আয় হয়েছে ২৩৭ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয় ৩৬ কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ২২৫ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ৩৩ কোটি টাকা। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৭৯ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ২৭ কোটি টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩০ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ২৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩২ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ২৭ কোটি টাকা। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৬০ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ২৭ কোটি টাকা। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৫৯ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ২৭ কোটি টাকা। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৪৬ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ২৯ কোটি টাকা। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে আয় হয় ৫৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ১৪ কোটি টাকা। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে ১১ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আয় হয়। তবে এই চার অর্থবছরে ব্যয়ের হিসাব পাওয়া যায়নি।
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০০০ সালে জাপানি দাতা সংস্থা জাইকার সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছিল শাহ আমানত বিমানবন্দর। নতুন করে অ্যাপ্রোন এরিয়া তৈরি করায় বিমান ধারণক্ষমতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০টিরও বেশি। সেইসঙ্গে বছর বছর বেড়েছে যাত্রী পরিবহন। গত অর্থবছরে তা তুলনামূক বেড়েছে। সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে বেড়েছে যাত্রীও।
বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত শাহ আমানত বিমানবন্দর হয়ে আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী যাতায়াত করেছেন ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৫৬ জন, ২০২৪ সালে ৯ লাখ ৮২ হাজার ৫৪০ জন, ২০২৩ সালে ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭৪ জন, ২০২২ সালে ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪ জন, ২০২১ সালে ৩ লাখ ২২৬ জন, ২০২০ সালে ৩ লাখ ১৪০ জন, ২০১৯ সালে ৭ লাখ ৭৬ হাজার ১০৬ জন, ২০১৮ সালে ৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬৫১ জন, ২০১৭ সালে ৭ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮ জন ও ২০১৬ সালে ৭ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৯ জন।
একই সময়ে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী যাতায়াতের মধ্যে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ৬ হাজার ৬৯০ জন, ২০২৪ সালে ১০ হাজার ৫০১ জন, ২০২৩ সালে ১২ হাজার ২৭৬ জন, ২০২২ সালে ১১ হাজার ৫৪২ জন, ২০২১ সালে ৪ হাজার ৯৮০ জন, ২০২০ সালে ৩ হাজার ৮৯০ জন, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৯৮০ জন, ২০১৭ সালে ৬ হাজার ১৪৮ জন, ২০১৬ সালে ৫ হাজার ৯৮০ জন, ২০১৫ সালে ৫ হাজার ১২৫ জন, ২০১৪ সালে ৫ হাজার ৩৪০ জন, ২০১৩ সালে ৫ হাজার ৫৬৭ জন যাত্রী দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী ইব্রাহিম খলিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শাহ আমানত বিমানবন্দরে এবার উল্লেখযোগ্য হারে রাজস্ব আয় হয়েছে। বলা যায় প্রতিষ্ঠার পর থেকে রেকর্ড রাজস্ব আয় হলো। মূলত যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি, বকেয়া আদায়সহ নানা খাত থেকে এবার সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় হয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে।’