ধানের পর এবার পাট দিয়ে তৈরি হলো দুর্গা প্রতিমা। আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার উত্তর মুরারীকাটি পালপাড়া সর্বজনীন পূজামণ্ডপে এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সোনালি আঁশ পাট দিয়ে গড়া প্রতিমা ইতোমধ্যে দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে এবং দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পলাশ কুমার পাল জানান, প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে চার জন ভাস্কর টানা তিন মাস পরিশ্রম করে প্রতিমাটি নির্মাণ করছেন। তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে ধান দিয়ে তৈরি প্রতিমা সারা দেশে সাড়া ফেলেছিল। সেই অভিজ্ঞতা ও উৎসাহ থেকে এবার পাট দিয়ে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।’
জানা গেছে, চলতি ২০২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। তবে তার আগেই প্রতিমাটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অসংখ্য দর্শনার্থী।
স্থানীয় তাপস পাল বলেন, ‘এমন প্রতিমা আগে কখনও দেখিনি। পাট দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ সত্যিই অসাধারণ ও অভিনব উদ্যোগ।’
কাজল কুমার পাল বলেন, ‘ধানের পর এবার পাট দিয়ে প্রতিমা নির্মিত হওয়ায় আমরা গর্বিত। এটি দেশজুড়ে আলোড়ন তুলছে।’
দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা মনে করছেন, এ ধরনের উদ্যোগ শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসকেই সমৃদ্ধ করছে না, বরং কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকলাকে নতুনভাবে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করছে।
প্রতিমাকে ঘিরে ইতোমধ্যেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কলারোয়ায়। মন্দির চত্বরে চলছে সাজসজ্জা, পূজা-অর্চনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, এবারের দুর্গোৎসব হবে কলারোয়ার ইতিহাসে স্মরণীয় ও ব্যতিক্রমধর্মী।
প্রসঙ্গত, এ বছর সাতক্ষীরায় সাতটি উপজেলায় মোট ৫৮৭টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। তার মধ্যে সাতক্ষীরা পৌরসভায় ১৮টিসহ সদর উপজেলায় ১০৬টি, তালা উপজেলায় ১৯৫টি, কলারোয়ায় ৪৪টি, শ্যামনগর উপজেলায় ৬৯টি, আশাশুনি উপজেলায় ১০৩টি, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৪৯টি ও দেবহাটা উপজেলায় ২১টি। জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের সংখ্যা ৫৫টি। তার মধ্যে শ্যামনগরে ২০টি, কালিগঞ্জে ২টি, দেবহাটায় ৪টি, আশাশুনিতে ২৩টি, কলারোয়ায় ৬টি রয়েছে বলে জানান পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
















