Swadhin News Logo
বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

চট্টগ্রাম দিয়ে আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের দেশ ছাড়ার গুঞ্জন

প্রতিবেদক
Nirob
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫ ৬:২০ অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম দিয়ে আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের দেশ ছাড়ার গুঞ্জন

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ও তার ছেলে সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রায়হান কবির যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক পরিদর্শনে তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার তথ্য উঠে আসায় দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। তারা সিঙ্গাপুর যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে বিএফআইইউ, সাউথইস্ট ব্যাংক ও দুদকের একাধিক সূত্র। 

সম্প্রতি আলমগীর কবির ও রায়হান কবির চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পালিয়ে বিদেশে যেতে চাইলেও যেতে পারেননি। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ বেশ কিছু অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ ইমরান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘কারও বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলে অবশ্যই তার নাম আমাদের ব্লক লিস্টে থাকে। ব্লক লিস্টে থাকা ব্যক্তিদের কোনোভাবেই বিমানবন্দর অতিক্রম করা সম্ভব নয়। হয়তো আলমগীর কবির ও রায়হান কবির এখানে আসার পর বিষয়টি বুঝতে পেরে ফিরে গেছেন। তবে তারা এই বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেননি এটা নিশ্চিত।’

এর আগে আলমগীর কবির ও তার ছেলে রায়হান কবিরের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, বিদেশি নাগরিকত্ব গোপন, অর্থ পাচার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকায় তাদের এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

গত ৪ আগস্ট দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। ওই দিন দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপপরিচালক আজিজুল হক তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনগুলো আদালতের কাছে উপস্থাপন করেন দুদক প্রসিকিউটর। পরে তা মঞ্জুর করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির উপপরিচালক আজিজুল হক।

আবেদনে বলা হয়, আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে উক্ত ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। তারা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে আদালতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপারের (ইমিগ্রেশন অপারেশনস) কড়া নির্দেশনা রয়েছে তারা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে। তাদের কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে দেবো না আমরা।’

এদিকে, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক পরিদর্শনে বাংলাদেশ থেকে ১৯৪ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে রাইয়ান কবিরের বিরুদ্ধে। দেশবন্ধু গ্রুপ ও জারা জামান টেকনোলজির নামে এলসি খুলে এ অর্থ বিদেশে নেওয়া হয়। অর্থ পাচারের পাশাপাশি রাইয়ান কবিরের শ্বশুরের প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতির তুলনায় ১৩ কোটি টাকা বেশি সুদ মওকুফ দিয়ে আত্মসাৎ, ১০ টাকার শেয়ার ২৫ টাকায় কেনাসহ নানা জালিয়াতির তথ্যও পাওয়া গেছে।

আলমগীর কবিরের ছেলে রাইয়ান কবির এবং তার পুত্রবধূ নুসরাত নাহারের নামে ২০১২ সালে সিঙ্গাপুরে ‘আর অ্যান্ড এন হোল্ডিংস পিটিই লিমিটেড’ কোম্পানি খোলা হয়। কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৪ লাখ সিঙ্গাপুরি ডলার। দেশ থেকে বৈধ উপায়ে এ অর্থ নেওয়া হয়নি। অথচ ব্যাংক ওই কোম্পানির অনুকূলে বিপুল অঙ্কের এলসি খুলেছে। এর মধ্যে ১৭টি এলসির বিপরীতে এক কোটি ৫৯ লাখ ১১ হাজার ৫৮৪ ডলার পাচার হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিএফআইইউ। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যার পরিমাণ ১৯৪ কোটি টাকা। 

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ কমিটিকে পাশ কাটিয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের নির্দেশে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই এই বিনিয়োগ করা হয়। বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজের প্রি-আইপিও শেয়ার কেনার সময় ও টাকা প্রিমিয়াম হিসেবে দেওয়া এক কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যাংকের ‘প্রমোশনাল ব্যয়’ হিসেবে বিকলন করা হয় যা সন্দেহজনক। প্রি-আইপি প্লেসমেন্টের প্রিমিয়াম হিসেবে দেওয়া অর্থ শেয়ার মানি ডিপোজিট হিসাবে জমা না করে এই টাকা পরস্পরের যোগসাজশে ভাগবাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, পরস্পরের যোগসাজশে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ঋণ জালিয়াতি, বিনিয়োগের আড়ালে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর, বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে আলমগীর কবির, রাইহান কবির এবং পুত্রবধূ নুসরাত নাহারসহ ব্যাংকের তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তা, ক্রেডিট কমিটি, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং বিভাগ, ট্রেজারি বিভাগ, সিআরএম বিভাগ, সিএফও এবং শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব অনিয়মে সহযোগিতা করেছেন। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের এসব তথ্য উত্থাপন করে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে জানাতে ইতোমধ্যে বর্তমান কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ। 

আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান শুরু হওয়ায় তারা পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র। এরই মধ্যে দুদক তাদের একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেও হাজির হননি। বর্তমানে আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের ব্যবহৃত মোবাইল প্রায়ই বন্ধ পাওয়া যায়। গণমাধ্যমকর্মী পরিচয়ে একাধিকবার কল ও মেসের দিলেও কোনও উত্তর দেননি।

 

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

আপনার জন্য নির্বাচিত