Swadhin News Logo
বৃহস্পতিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই, বললেন স্বপ্নপূরণ হলো

প্রতিবেদক
Nirob
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫ ৯:৪৮ অপরাহ্ণ
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই, বললেন স্বপ্নপূরণ হলো

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-তে চাকরি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন লালমনিরহাট বিজিবি ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম। অধিনায়ক মেহেদী ইমাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চাকরির সুযোগ পাওয়া ফেলানীর ছোট ভাইয়ের নাম আরফান হোসেন। তিনি বিজিবিতে সৈনিক পদে ১০৪তম ব্যাচে চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। যোগদানের পর সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করতে পারলে তিনি চাকরিতে নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন (১৪)। কাঁটাতারের বেড়ায় তার রক্তমাখা লাশ ঝুলে থাকে কয়েক ঘণ্টা। এ নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ সৃষ্টি হলে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে ভারত সরকার। প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাদের সীমান্তনীতি। চাপের মুখে পড়ে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের বিচার শুরু করে বিএসএফ। তাদের গঠিত আদালতে দুই দফায় বেকসুর খালাস পান অমিয় ঘোষ। অমিয় ঘোষকে খালাস দেওয়ার রায় প্রত্যাখ্যান করে ২০১৫ সালে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে যৌথ রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম এবং ভারতীয় মানবাধিকারকর্মী কিরিটি রায়। কিন্তু একের পর এক তারিখ পিছিয়ে আজও সে রিটের নিষ্পত্তি হয়নি। কাঁটাতারে ফেলানীর ঝুলে থাকা লাশের মতো বিচারও ঝুলে আছে।

লালমনিরহাট বিজিবি সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট বিজিবি ১৫ ব্যাটালিয়ন আয়োজিত সৈনিক পদে ১০৪তম ব্যাচের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন ফেলানীর ভাই আরফান। সকল প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী ইমাম। এ সময় ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

২০১১ সালে ফেলানী হত্যার পর থেকে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে বিচারের দাবি করে আসছে তার পরিবার। দীর্ঘ লড়াইয়ে নানা চড়াই উতরাই ও সংকটের মধ্যে দিনানিপতার করছিল পরিবারটি। তাদের দাবি ছিল, ফেলানীর ছোট ভাইবোনদের সরকারি চাকরির সুযোগ দিয়ে জীবন-জীবিকার স্থায়ী সংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার। ছোট ভাই আরফানের চাকরির সুযোগে পরিবারটি আশার আলো দেখতে পেলো। 

ফেলানীর ভাই আরফান হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফেলানী হত্যার পর মানুষ যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল একদিন সুযোগ পেলে বিজিবিতে যোগ দেবো। আজ সেই স্বপ্নপূরণ হওয়ার পথে। সবার দোয়া চাই যেন ভালোভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করে চাকরিতে নিয়মিত হতে পারি। আমাকে দেশের সীমান্তরক্ষার দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়ায় বিজিবিকে ধন্যবাদ জানাই। আমার পরিবারের জন্যও এই চাকরি জরুরি ছিল।’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার চোখের সামনে আমার মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারি না। তবে দেশবাসী আর বিজিবি সবসময় আমাদের পাশে ছিল। দোকান করে দিয়ে সহায়তা করেছে। আজ আমার ছেলে বিজিবিতে চাকরির সুযোগ পেলো। এটা আমার পরিবারের জন্য উপকার হলো।’

বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে রয়েছে। ফেলানীর ছোট ভাই সৈনিক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষে তাকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।  আগামীকাল আমাদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগদান করবে। আমরা বিশ্বাস করি, সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি দক্ষ সৈনিক হিসেবে দেশের সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত হবেন।’

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক