চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামে পূর্ববিরোধের জেরে আপন দুই ভাইকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের একদল দুর্বৃত্ত।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার উথলী গ্রামের ব্রিজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই ভাই আনোয়ার হোসেন মিন্টা ও মো. হামজা। তারা ওই গ্রামের বড় মসজিদপাড়ার মৃত ক্ষুদে মণ্ডলের ছেলে। এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সকালে নিজেদের কৃষিকাজের উদ্দেশে ব্রিজ মাঠে যান মিন্টা ও হামজা। সে সময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা ৫ থেকে ৭ জন দুর্বৃত্ত তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলাকারীরা দুই ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান হামজা। এ সময় স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় মিন্টাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সদর হাসপাতালে তারও মৃত্যু হয়।
নিহতদের সেজো ভাই তোতা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘গত এপ্রিল মাসে নিজামুদ্দিন খোকা নামের এক ব্যক্তি আমাদের একটি গরু মুখে বায়না করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা না দেওয়ায় আমরা গরুটি বিক্রি করে দিই। এরপর থেকেই খোকা ও তার লোকজন আমাদের হুমকি দিতে থাকে। এবার সেই বিরোধের জেরেই ওরা আমার দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেললো। আমরা আগেই পুলিশের কাছে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কিছু হয়নি। আজ আমার ভাইয়েরা আর বেঁচে নেই।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, ‘রক্তাক্ত ও শঙ্কাজনক অবস্থায় আনোয়ার হোসেন মিন্টা জরুরি বিভাগে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ভর্তি করা হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া মো. হামজাকে জরুরি বিভাগে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। হামজার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে।’
চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। হামলাকারীরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।’
এদিকে, দুই ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডে উথলী গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।













