সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আরামিট পিএলসির দুই কর্মকর্তাকে আরও তিন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন- আরামিট পিএলসির কর্মকর্তা উৎপল পাল ও আবদুল আজিজ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর স্পেশাল জজ (ভারপ্রাপ্ত) আদালতের বিচারক মো. আবদুর রহমান এ আদেশ দেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোকাররম হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আরামিট পিএলসির গ্রেফতার দুই কর্মকর্তা উৎপল পাল ও আবদুল আজিজকে দুদকের দায়ের করা আরও তিনটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে তাদের উপস্থাপন করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে তাদের জিজ্ঞেসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার আবদুল আজিজ ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও দুদকের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আর আরামিট পিএলসির এজিএম উৎপল পালকে নতুন করে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে উৎপল পাল সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বাংলাদেশ থেকে দুবাই ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন ও আবদুল আজিজ জাবেদের দেশের সম্পদ দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন। উৎপল পালের কাছে পাওয়া দুটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। যা ফরেনসিক করার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আজিজ সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণকারী হিসেবে কাজ করেন।
এদিকে, বিদেশে পলাতক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে ইস্যু করা ১১টি চেক ব্যবহার করে চারটি ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মধ্যে ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জব্দ করেছে দুদক। গতকাল বুধবার বিকালে নগরের কালুরঘাট এলাকায় সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আরামিট পিএলসি কার্যালয়ের ড্রয়ার ও ভল্ট থেকে এই টাকা জব্দ করা হয়। এর আগে দুদক আরামিটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে। তিনিই ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা তুলেছিলেন সম্প্রতি। দুদক বলছে, টাকাগুলো নগদ করে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারের জন্য রাখা হয়েছিল।
দুদকের আইনজীবী মোকাররম হোসেন বলেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সই করা চেকগুলোর আসল কপিসহ (মুড়ি) জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের মালিকের অনুপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া টাকা উত্তোলনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকালে ব্যাংক থেকে তোলা ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মধ্যে ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জব্দ করেছে দুদক।