বাবার বাড়ি ভারতে, বিয়ে হয়েছে বাংলাদেশে। বাবার মৃত্যু সংবাদ পেলেও বাধ সাধে কাঁটাতারের বেড়া। তবে শেষ পর্যন্ত দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের উদারতায় শেষবারের মতো বাবার মুখটি দেখলেন মেয়ে মিতু মন্ডল (৩৮) ও তার স্বজনরা।
বুধবার (১ অক্টোবর) বিকালে যশোরের শার্শা সীমান্তে শেষবারের মতো ভারতীয় নাগরিক জব্বার মন্ডলের (৭৫) লাশ দেখলেন বাংলাদেশি স্বজনরা।
সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো ভারতীয় নাগরিক জব্বার মন্ডলের লাশ তার আত্মীয়-স্বজনদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)।
যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা সীমান্তের মেইন পিলার ২৫/৬-এস এর কাছে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ স্বজনদের দেখানো হয় বলে জানান যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী।
এই বিজিবি কর্মকর্তা জানান, ভারতের বাগদা থানার বাঁশঘাটা গ্রামে ভারতীয় নাগরিক জব্বার মন্ডল বার্ধক্যজনিত কারণে মঙ্গলবার মারা যান। মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাংলাদেশি স্বজনরা লাশ দেখতে বিজিবির কাছে একটি আবেদন করেন। অপরদিকে বাংলাদেশে অবস্থিত জব্বারের স্বজনদের লাশ দেখানোর জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে বিজিবির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ স্বজনদের দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এ সময় বাবার লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাংলাদেশে থাকা তার বড় মেয়ে মিতু মন্ডলসহ তার স্বজনরা। এ সময় দুই সীমান্তরক্ষীদেরও চোখ মুছতে দেখা যায়। পরে লাশ দাফনের উদ্দেশে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বাংলাদেশি স্বজনরা তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে যান।
যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পোড়াবাড়ি গ্রামের বাবলু মন্ডলের সঙ্গে মিতু মন্ডলের এর বিয়ে হয়। তার বাবার বাড়ি ভারতের উত্তর ২৪ পরগণার বাগদা থানার বাঁশঘাটা গ্রামে।
বেনাপোল পোর্ট থানার পোড়াবাড়ী গ্রামের বাবলু মন্ডল বলেন, পাসপোর্ট ভিসা না থাকায় শ্বশুরের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর তারা বিচলিত হয়ে পড়ি। পরে বিজিবি ক্যাম্পে আবেদন করার পর তারা শেষবারের মতো মৃত মুখটি দেখার সুযোগ করে দেয়। আমরা বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞ।
যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সে সময় উপস্থিত ছিলেন- ধান্যখোলা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার সেলিম মিয়া এবং ভারতের ৬৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন মোস্তফাপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সঞ্জয় কুমার রায়।