গাজীপুরের শ্রীপুরে সৌদিপ্রবাসী আকতার হোসেনের স্ত্রী ইতি আক্তারকে (২২) শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শাশুড়ি ও ননদ ইতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচার চালিয়েছে এমন অভিযোগ করেন তার মা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকালে উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে গৃহবধূ ইতি আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ইতি রাজাবাড়ী ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রামের আকতার হোসেনের স্ত্রী এবং পাশের কাপাসিয়া উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ঘিঘাট গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। তার স্বামী সৌদিপ্রবাসী আকতার হোসেন আব্দুল জলিলের ছেলে।
ইতি আক্তারের মা বিলকিস বেগম বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আকতার হোসেনের সঙ্গে ইতি আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আফরিন নামে আড়াই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইতিকে নির্যাতন করতো। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আমরা টাকাপয়সা দিয়ে ইতির স্বামীকে সৌদি পাঠাই। তারপরও শাশুড়ি ও ননদের নির্যাতন থামেনি। নির্যাতনে অসহ্য হয়ে প্রায়ই আমার মেয়ে কাপাসিয়ার ঘিঘাট গ্রামের তার বাবার বাড়ি চলে আসতো। কয়েকদিন আগেও শাশুড়ি ও ননদের নির্যাতনে ইতি বাবার বাড়ি চলে আসে। তার স্বামী আকতার হোসেন দেশে ফিরে ইতিকে বুঝিয়ে তার শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যায়। এক মাস আগে ইতির স্বামী আবার সৌদি চলে যায়।’
তিনি আরও জানান, ইতির শ্বশুরবাড়ির লোকজন সকালে তাকে ফোন করে বলে মেয়েকে দেখতে হলে দ্রুত তাদের (মেয়ের শ্বশুরবাড়ি) বাড়িতে যেতে হবে। ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে উপস্থিত হয়ে দেখেন ঘরের বারান্দায় মেয়ের মরদেহ। পরে মেয়ের শাশুড়ি ও ননদ জানায়, ইতি আত্মহত্যা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, শাশুড়ি ও ননদ পরিকল্পিতভাবে ইতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে।
ইতির ননদ মিনারা খাতুন বলেন, ‘ভাবির সঙ্গে আমাদের কোনও ধরনের ঝগড়া বা মনোমালিন্য ছিল না। ভাই প্রবাসে থাকার কারণে ভাবি প্রায়ই বাবার বাড়িতে থাকতেন। এ বিষয়ে মা মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কটু কথা বলতেন। ভাবি কী কারণে আত্মহত্যা করছেন বুঝতে পারছি না।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে গলায় চিকন একটি দাগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে—এটি হত্যা না আত্মহত্যা।’