নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আনিকা আক্তার আনিকা (১৯) নামে এক বাউলশিল্পীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আনিকার স্বামী হাবিবুর রহমানকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোরে ফতুল্লার ভুঁইগড় মাস্টারবাড়ি এলাকার একটি পাঁচতলা ভবনের চতুর্থ তলায় এ ঘটনা ঘটে।
আনিকা মাদারীপুর জেলার মোস্তফাকুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। হাবিবুর ও আনিকা ফতুল্লার ভুঁইগড় এলাকায় মাস্টারের বাড়ির একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। তাদের চার মাস বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোরের দিকে আনিকার স্বামী হাবিবুর রহমান স্ত্রীকে অচেতন অবস্থায় সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় আনিকার গলায় ওড়না প্যাঁচানো দাগ ছিল এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানায়। এতে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে পাঠায়।
এ ঘটনায় স্বামী হাবিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
আনিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে হাবিবুর ভালোবেসে আনিকাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরও হাবিবুর নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া করতেন এবং আনিকার ভরণপোষণ দিতেন না। গত চার মাস আগে আনিকা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। আনিকা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকের বিভিন্ন বাউল ক্লাবে গান করতেন ও তার উপার্জিত টাকা স্বামী জোর করে নিয়ে নিতেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি মালা নামে আরেক নারী বাউলশিল্পীকে বিয়ে করেন হাবিবুর। এ নিয়ে তাদের সংসারে ফের ঝগড়া শুরু হয়। এরপর আনিকাকে তালাকের নোটিশ পাঠায় তার স্বামী। আনিকা নোটিশ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির কাছে নালিশ করলে হাবিবুর আরও ক্ষিপ্ত হন। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। এর জের ধরেই আমার মেয়েকে হত্যা করেছে হাবিব।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হবে। এই ঘটনায় আনিকার স্বামীকে আটক করা হয়েছে।’