রাজশাহীর সার্কিট হাউসের শতবর্ষী ও পঞ্চাশোর্ধ বয়সের গাছগুলো না কাটাসহ তিন দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। রবিবার (৫ অক্টোবর) বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ বরাবর এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা এটি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে গাছ কেটে সার্কিট হাউস সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনাসহ তিনটি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো– সার্কিট হাউস সম্প্রসারণের জন্য গাছ না কেটে বাঁচিয়ে রাখতে হবে; রাজশাহী বিভাগে ভবিষ্যতে গাছ, প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের কোনও ক্ষতি না করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে; প্রকল্প গ্রহণের আগে প্রয়োজনে পরিবেশকর্মী, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উন্নয়নকর্মী আফজাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই-৩৬ পরিষদের সভাপতি মাহমুদ জামাল কাদেরী, ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাসের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যাল, আন্দোলনকর্মী ওয়ালিউর রহমান বাবু, সেভ ইয়ুথ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপ্টারের সভাপতি সামসাদ জাহানসহ অনেকে।
স্মারকলিপির অনুলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান এসএম তুহিনুর আলম, পরিবেশ অধিদফতর রাজশাহীর উপপরিচালক তাছমিনা খাতুন, রাজশাহী গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী ও গণপূর্ত বিভাগ-১ রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী রাসেদুল ইসলামকে দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘রাজশাহীর চরমভাবাপন্ন আবহাওয়াকে স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজন সবুজ বেষ্টনী এবং প্রচুর জলাধার। কিন্তু শহরের সবুজ বেষ্টনী ও জলাধারগুলোর এক বৃহৎ অংশ ইতোমধ্যেই ধ্বংস করা হয়েছে। নানাবিধ উন্নয়নের নামে রাজশাহীর প্রাণ-প্রকৃতি, পরিবেশের ওপর আঘাত হানা হয়েছে বহুবার। কেটে ফেলা হয়েছে এখানকার ঐতিহ্যবাহী, শতবর্ষী বড় বড় সব বৃক্ষরাজি। এখন উন্নয়ন মানেই গাছ কাটা আর কংক্রিটে ভরে দেওয়া। এ ধরনের অপরিকল্পিত উন্নয়ন মানুষের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলছে, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে অন্য প্রাণীদের আবাসস্থল ও অধিকার হরণ করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করা হচ্ছে।
‘আমরা চাই, প্রকৃতিবান্ধব তথা টেকসই উন্নয়ন। আমরা চাই, রাজশাহীর সার্কিট হাউসের শতবর্ষী ও পঞ্চাশোর্ধ বয়সের গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে। পৃথিবীর বহু দেশ ও শহরে এরকম উন্নয়নের অনেক উদাহরণ রয়েছে যেখানে বৃক্ষ সুরক্ষা করে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’