রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন ক্যাম্পাসে দুই হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি ছয় প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া গোয়েন্দা সংস্থা, বিএনসিসি ও স্কাউট সদস্যরাও নিরাপত্তা কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি), র্যাব ও বিজিবির প্রতিনিধিদের মধ্যে এক সমন্বয় সভা শেষে এসব তথ্য জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।
তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ভোটগ্রহণ থেকে ফল ঘোষণার পুরো প্রক্রিয়া পর্যন্ত আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা জায়গা ও কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও বিশেষ আলোচনা হয়েছে।’
আরএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে কিছু বস্তি এলাকা আছে, যেখানে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের উপস্থিতি থাকতে পারে বলে আমরা মনে করছি। সেই এলাকাগুলোতেও তল্লাশি চালানো হবে। এ ছাড়া আবাসিক হলে যেন কোনও বহিরাগত অবস্থান না করে সে বিষয়েও আমরা নজরদারি করছি।’
র্যাব ও বিজিবি মোতায়েনের বিষয়ে আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এ নির্বাচনে পুলিশের পাশাপাশি ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব মোতায়েন থাকবে।’ পুলিশ কত দিন ক্যাম্পাসে থাকবে, এ বিষয়ে আবু সুফিয়ান বলেন, ‘পুলিশ ক্যাম্পাসে আসা শুরু করেছে। তিন দিন পর্যন্ত থাকবে। তবে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সম্মেলনকক্ষে সভায় উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব সভাপতিত্ব করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান, রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম, রাকসু কোষাধ্যক্ষ ও চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক মো. সেতাউর রহমান জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সভায় আরএমপি কমিশনার আবু সুফিয়ান ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নাজমুল হাসান, রাজশাহী বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল হক, র্যাব-৫-এর সিনিয়র এএসপি সালমান ফার্সী, আরএমপির উপকমিশনার মো. গোলাম রব্বানী শেখ, মতিহার জোনের উপকমিশনার মো. মমিনুল করিম, ডিবির উপকমিশনার মাঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আমরা চাই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এজন্য তিন বাহিনীর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত সমন্বয় হচ্ছে। হলগুলোতে যাতে কোনও বহিরাগত না থাকে বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।’
রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে দুই হাজার পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন কমিশনের একটি বিশেষ টিমও মাঠে কাজ করবে। কোনও প্রার্থী বা প্যানেল আচরণবিধি ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’