গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘একদিকে আমরা অনেক আশাবাদী নির্বাচন হবে। মানুষ ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। অন্যদিকে, নির্বাচনের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখতে পাচ্ছি। কারণ, গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিসমূহ সরকারের সমালোচনা করে নাস্তানাবুদ করছে। এমনটা চলতে থাকলে সামনে সকলের জন্যই শনির দশা অপেক্ষা করছে। কাজেই প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আমাদের (রাজনৈতিক দলের) কথা বলা প্রয়োজন। কীভাবে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়—সকল রাজনৈতিক দলকে সেই দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর চৌরাস্তায় জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে আমরা যে কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ চাই, সেই বাংলাদেশ রাতারাতি গড়ে উঠবে না। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং আমলাতন্ত্রের স্বভাব ও চরিত্রের পরিবর্তন না হলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। সেজন্য রাজনৈতিক সমঝোতা, ঐক্য এবং সম্মতির ভিত্তিতে আগামীতে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হলে সেই সরকার পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল এবং উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবে। যদি আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন থাকে, অনৈক্য থাকে তাহলে ওই স্বৈরাচারী শক্তি আবার ফিরে আসবে, ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেবে। আমরা কেউ নিরাপদ থাকবো না।’
নুর বলেন, ‘গত ২৯ আগস্ট সেনাবাহিনীর একটি পথভ্রষ্ট অংশ দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য আমাদের ওপরে হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু যখন তারা দেখেছে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল একবিন্দুর নিচে এসে দাঁড়িয়েছে, একই দাবিতে একই সুরে কথা বলছে, তারা পেছনে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাহসী ভূমিকায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা জানতে চাই তাদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই সরকার আমাদের সকলের সরকার, কিন্তু তাদেরকে আমরা যেই পরামর্শ দিই, সেসব পরামর্শ সরকার সঠিকভাবে আমলে নেয় না। যার ফলে শুরুতে এ সরকারের যে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ছিল তা দিন দিন কমছে। কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা বলেছিলাম, মুজিব কোটের আধিপত্য একদিন শেষ হবে। এখন ফ্রি দিলেও মানুষ মুজিব কোট নেবে না। ভয়েও এখন কেউ মুজিব কোট পরে না।’
পাঁচ দিনের সফরের অংশ হিসেবে নুুরুল হক নুর পটুয়াখালী, গলাচিপা ও দশমিনার বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও মতবিনিময় করছেন। সভায় গণঅধিকার পরিষদ, ছাত্রঅধিকার পরিষদ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।