সুনামগঞ্জের যাদুকাটা বালু মহালের ইজারা করা সীমানার বাইরে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন বন্ধ ও ভারতীয় সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে বালু সংগ্রহ বন্ধ করতে বিজিবি তৎপর রয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে একযোগে দেড় হাজার নৌকার ২০ হাজার শ্রমিক নিয়ে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করে। এ ছাড়া নদী তীরবর্তী এলাকার জমির মালিকরা ক্ষেতের নিচে থাকা বালু অবৈধভাবে বিক্রি করে নদী তীরের ক্ষতি সাধন করে। এ ছাড়া রাতের আঁধারে মহালের সীমানা পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে জিরো পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করে। এসব ঘটনার পর থেকে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী লাউড়ের বিওপিতে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সম্প্রতি যাদুকাটা ১ ও ২ বালু মহাল এক বছরের জন্য ১০৭ কোটি টাকায় ইজারা দিয়ে ইজারা করা অংশ ইজারাদারকে নদীতে লাল নিশানা টানিয়ে সীমানা চিহ্নিত করে দেয়। এরপরও কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ী নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে নদীর পাড় কেটে ও জিরো পয়েন্ট অতিক্রম করে বালু উত্তোলন করছে। এতে জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র যাদুকাটা নদী শিমুল বাগানসহ নদী তীরবর্তী গ্রাম ও বিভিন্ন স্থাপনা হুমকিতে পড়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে বিজিবি ও টাস্কফোর্স নিয়মিত নদীতে অভিযান চালাচ্ছে। বর্তমানে নদীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিজিবির সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বিজিবির নৌযান ঘাটে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, বালু উত্তোলনকারীদের অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করতে সীমান্ত পাহারার পাশাপাশি নদীর তীর সংরক্ষণে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। ফলে এলাকায় চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে যাদুকাটা নদীতে স্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, নদীরপাড় কাটা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হলে পুলিশ, আনসার ও বিজিবির যৌথ ক্যাম্প বসাতে হবে সেখানে। কাছাকাছি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও রাখতে হবে। তাহিরপুর বা সুনামগঞ্জ থেকে এসে এই দুর্বৃত্তায়ন ঠেকানো যাবে না। ইজারাদারের সীমানা নির্ধারণ প্রশাসনকে আরও স্পষ্ট করে করতে হবে। নদী থেকে পাড়ের দিকে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দিতে হবে। নিয়মিত জনসচেতনতা প্রোগ্রাম করতে হবে।