চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ (সিইপিজেড) এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় লাগা আগুনের তীব্রতা বেড়ে চলেছে। আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ৯ তলা ভবনের নিচতলা পর্যন্ত। আগুনের তীব্রতায় আশপাশের আরও কয়েকটি কারখানা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আগুনের তীব্র তাপে পাশের কয়েকটি কারখানার ভবন অতিরিক্ত গরম হওয়ায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কারখানাগুলোর অভ্যন্তরে পানি ছিটিয়ে শীতল রাখার চেষ্টা করছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।
আগুন লাগা ভবনের পাশের কারখানা স্মার্ট জ্যাকেটের কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আগুনের তাপ পার্শ্ববর্তী কারখানার ভবনে আঘাত করছে। ক্ষতি এড়াতে আমাদের কারখানার ভবনে পানি ছিটিয়ে শীতল করা হচ্ছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে সিইপিজেডের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কারখানাটির ৭ তলায় আগুন লাগে। বর্তমানে ৯ তলা ভবনের নিচতলা পর্যন্ত পুরোটাই ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট কাজ করছে। পাশাপাশি আগুন নেভাতে যুক্ত হয়েছে- নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ফায়ার ইউনিট। কাজ করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ। রাত ৮টা পর্যন্ত দীর্ঘ ছয় ঘণ্টায়ও এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং আগুনের লেলিহান বাড়ছেই।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কারখানায় এ আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট। এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জসিম উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন লাগা প্রতিষ্ঠানটিতে তোয়ালেসহ হাসপাতালে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তৈরি করা হয়। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ হতাহত হয়নি।’
ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বন্দর, আগ্রাবাদ, ইপিজেড, কালুরঘাট ও চন্দনপুরা স্টেশনের ২৩ ইউনিট।
সিএমপির ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড নামের ওই কারখানায় লাগা আগুনের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। বর্তমানে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথমে ভবনের সপ্তম তলায় যেখানে আগুন লাগে সেখানে প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামও তৈরি করা হয়। মূলত জিনিসপত্র রাখার গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে কারখানাটির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। ওইখানে লোকজন ছিল না বলে জেনেছি। যারা নিচের তলায় ছিল তারা বেরিয়ে এসেছে। কেউ কেউ হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ফায়ার ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। সহযোগিতা করছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ।