বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন করেও সাড়া মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ আবেদনকারীর।
কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদনকারী বলছেন, সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বেড়েছে, একইসঙ্গে বেড়েছে জনপ্রতিনিধির সংখ্যাও। এ কারণে খোলামেলা বড় পরিসরে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় রাজারচর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র স্থাপনে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন করেছেন স্থানীয় মেম্বার শাকিল রাঢ়ী। কিন্তু ওই আবেদনপত্র জেলা নির্বাচন অফিসের দুই কর্মকর্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ তার।
শাকিল রাঢ়ী বলেন, ‘আগে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য রাজারচর (জমোদ্দার বাড়ি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়। ওই সময় ভোটারদের সুবিধার্থে তিনটি কেন্দ্রের মাঝ বরাবর ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এরপর ৪ নম্বর ওয়ার্ড পৃথক হলে ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা রাজারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতেন। পরবর্তীতে ৬ নম্বর ওয়ার্ডও পৃথক হলে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য ওই কেন্দ্রটি বলবৎ থেকে যায়। ৩টি ওয়ার্ড থাকাকালীন রাজারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি মধ্যস্থলে অবস্থান করছিল। কিন্তু তিনটি কেন্দ্র পৃথক হয়ে যাওয়ায় এখন ৫ নম্বর ওয়ার্ডবাসীর জন্য ওই স্থানটি দুর্গম স্থানে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ। কেন্দ্র একেবারে ছোট পরিসরে থাকায় সেখানে ভোট নেওয়ার পরিবেশ নেই বললেই চলে। এ ছাড়া কেন্দ্রটি নিরাপদও নয়। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই কেন্দ্রে একজন প্রার্থীর ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এজন্য এলাকাবাসীর পক্ষে সেপ্টেম্বর মাসে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আবেদনে বলা হয় বর্তমানে যে স্থানে কেন্দ্র রয়েছে তার আশপাশে মাত্র ২০ ভাগ ভোটার আছেন। প্রস্তুাবিত কেন্দ্রের চার পাশে রয়েছে ৮০ ভাগ ভোটার। এমনকি বড় পরিসরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ এবং যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় সেখানে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন জানানো হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিন তদন্ত হলেও আজ পর্যন্ত কেন্দ্র পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে যেতে বলেন। বিভাগীয় কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা মনির খালাসী, বেলায়েত সিকদার, তরিকুল ইসলাম, সমীর ব্যাপারী, রামেশ্বর বনিক ও মাইদুল গাজী জানিয়েছেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিন হাজারের বেশি ভোটার রয়েছেন। বর্তমানে যেখানে ভোটকেন্দ্র সেখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ। এমনকি যে স্থানে ভোটগ্রহণ করা হয় সেই ভবনের অবস্থাও ভালো না। কেন্দ্রের আশপাশে মাত্র ১৮ থেকে ২০ ভাগ ভোটারের অবস্থান। নতুন প্রস্তাবিত স্থানে কেন্দ্র হলে সবচেয়ে ভালো হয়।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তা প্রকাশ করা হবে।’