ধর্ষণের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে আবু হানিফ (৩০) নামে এক নিরাপত্তাপ্রহরীকে ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে হত্যার ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ও পুলিশ।
নিহত আবু হানিফ বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে। তিনি খানপুর জিতু ভিলায় নিরাপত্তাপ্রহরীর কাজ করতেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শহরের খানপুর জোড়া পানি ট্যাংকির ভেতরে ছয় যুবক মিলে আবু হানিফকে ইট দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করছে। এ সময় সেখানে ছোট একটি শিশু দাঁড়ানো ছিল। আবু হানিফ অনেক কাকুতি-মিনতি করেও তাদের হাত থেকে রক্ষা পাননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দুপুরে এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে আবু হানিফকে তার বাসা থেকে তুলে খানপুর জোড়া ট্যাংকের ভেতরে নেওয়া হয়। সেখানে পাঁচ-সাত জন যুবক ইট দিয়ে তাকে একের পর এক আঘাত করে থেঁতলে দেন। এ সময় আবু হানিফ কাকুতি-মিনতি করলেও রেহাই পাননি। একের পর এক ইটের আঘাতে আবু হানিফ অচেতন হয়ে পড়লে ওই যুবকেরা তাকে ফেলে চলে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৯টার দিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে ১০ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।
এরই মধ্যে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন- বাহার (৩৬), সাইদুল ইসলাম (২৫) ও মুশফিকুর রহমান (২৯)। পাশাপাশি বুধবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া এলাকা থেকে অপু (২৫) নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। গ্রেফতার অপু শহরের খানপুর এলাকার হারা মিয়ার ছেলে। সে মামলার ৯ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
নিহত হানিফের ভগ্নিপতি ইব্রাহিম হোসেন জানান, ওই দিন দুপুরে তার শ্যালক আবু হানিফকে বাসা থেকে কয়েকজন যুবক মারতে মারতে নিয়ে যান। খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান বলেন, ‘ ধর্ষণের অভিযোগে ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যার ঘটনার ভিডিও পর্যালোচনা করে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওই শিশুর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করছি আমরা।’