মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ছোড়া গুলিতে কক্সবাজারের টেকনাফের ছেনুয়ারা বেগম নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া আরেকটি গুলি এসে স্থানীয় একটি দোকানের টিনের চাল ছিদ্র হয়ে ভেতরে পড়েছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের তেচ্ছি ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ছেনুয়ারা বেগম ওই এলাকার লম্বাবিল বাগগুনা গ্রামের আখতার হোসেনের স্ত্রী। এ ছাড়া একই এলাকার কম্পিউটার দোকানি মেজবাহ উদ্দিনের দোকানের চাল ছিদ্র করে আরেকটি গুলি ভেতরে পড়ে।
বিজিবির উখিয়া ৬৪ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হোয়াইক্যং সীমান্ত এলাকায় এক নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়েছি। তারা কুতুপালং হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে শুনেছি। এ বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
গুলিবিদ্ধ নারীর স্বামী আখতার হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি এসে বাড়ির উঠানে আমার স্ত্রীর পায়ে লাগে। এ সময় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে আমার শিশুসন্তান। তখন মায়ের কাছেই ছিল শিশুটি। স্থানীয় লোকজন তাকে কুতুপালং হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানের চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিতে বলেন। আমরা এখন তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।’
তেচ্ছি ব্রিজ এলাকার কম্পিউটার দোকানি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘হঠাৎ বিকাল ৫টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি গুলি দোকানের টিনের চাল ভেদ করে ভেতরে এসে পড়ে। আরেকটি গুলি দোকান লংলগ্ন বাড়িতে গিয়ে ছেনুয়ারার পায়ে লাগে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে দোকান থেকে তাজা গুলিটি উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি আমরা।’
ওই এলাকার বাসিন্দা মো. রফিক বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত কয়েকদিন ধরে সীমান্তের ওপারে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হোয়াইক্যংয়ের এক নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়েছি। আমরা তার বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থলে দুটি গুলির খোসা এবং টিনের চালে ছিদ্রের চিহ্ন পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, মিয়ানমার থেকে দুটি গুলি বাংলাদেশে এসে পড়েছে। তবে এখানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গত ১০ অক্টোবর উখিয়ার রহমবিল এলাকায় মো. ইয়াস নামের এক রোহিঙ্গা নাগরিক গুলিবিদ্ধ হন।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গত ৪ অক্টোবর মধ্যরাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের চাকমাপাড়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছিল। রাখাইন রাজ্যের দখলে থাকা আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা), আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), আরাকান রোহিঙ্গা আর্মিসহ (আরআইআর) কয়েকটি গোষ্ঠীর গোলাগুলি ও সংঘর্ষ চলছে।

















