মামলার আসামি না হয়েও গ্রেফতার হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের অরুয়াইল বাজারের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগীর স্বজনরা। রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে অরুয়াইল বাজারে ‘অরুয়াইল ইউনিয়নবাসীর’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় লোকজন ছাড়াও বিএনপি, জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ এবং অরুয়াইল বাজারের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ থেকে পরবর্তী কয়েকদিন আন্দোলন করেছিল হেফাজতে ইসলাম। ২৮ মার্চ দেশব্যাপী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও তৌহিদি জনতার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছিল। ওই দিন সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায় হরতালে অংশ নিয়ে সহিংসতায় নিহত হন সরাইলের কুট্টাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হাফেজ আল আমিন (১৭)। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল আমিনের বাবা মো. শফি আলী বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে প্রধান আসামি করা হয়। এজাহারে ৭২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মাহবুবুর রহমানের স্বজনরা জানিয়েছেন, আল আমিন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও ওই মামলায় গত ২১ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মাহবুবুরকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এরপর থেকে কারাগারে আছেন। মূলত মাহবুবুর একটি চক্রের মামলা বাণিজ্যের শিকার বলে জানিয়েছেন তার বড় ভাই হাবিবুর রহমান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অরুয়াইল ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক সানাউল্লাহ ভূঁইয়া, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মো. শফিক এবং গ্রেফতার মাহবু্বুর রহমানের বড় ভাই হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
সানাউল্লাহ ভূঁইয়া ও আব্দুল আজিজ বলেন, ব্যবসায়ী মাহবুবুর ছাত্রলীগের একটি কমিটিতে আছেন উল্লেখ করে তাকে একটি চক্র গ্রেফতার করিয়েছে। কিন্তু ছাত্রলীগের ট্যাগযুক্ত করে তৈরি করা তালিকাটি ভুয়া। তার পরিবারের কেউ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। আল আমিন হত্যা মামলার এজাহারেও মাহবুবুরের নাম নেই। শত্রুতাবশত ভুল তথ্য দিয়ে তাকে গ্রেফতার করানো হয়েছে। আমরা তার মুক্তির দাবি জানাই। মানববন্ধন শেষে মাহবুবুরের মুক্তির দাবিতে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এতে বাজারের ব্যবসায়ীরাও অংশ নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আল আমিন হত্যা মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে ঘটনায় কে সম্পৃক্ত আর কে সম্পৃক্ত নয়। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে মাহবু্বুর রহমানকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।’
















