রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ-আল মামুনের ফেসবুক পোস্টের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নারী শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে শহীদ মিনারে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- চাকসুর নবনির্বাচিত ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও শাখা ছাত্রী সংস্থার সেক্রেটারি নাহিমা আক্তার দীপা, সহ-ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা, সহ-দফতর সম্পাদক জান্নাতুল আদন নুসরাতসহ নারী হল সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা।
এ সময় চাকসুর ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নাহিমা আক্তার দ্বীপা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আ-আল মামুন রাকসু প্রতিনিধিদের হিজাব পরিহিত অবস্থায় শপথগ্রহণের একটি ছবি নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন এবং তার স্বাধীনতার উদাহরণ দিতে গিয়ে টু কোয়ার্টার প্যান্ট এবং মদ নিয়ে ক্লাসে আসার উদাহরণ দিয়েছেন। এটি আমাদের ধর্মীয় অনুশাসন এবং দেশীয় আইনের পরিপন্থি। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই, সেই সঙ্গে হিজাবকে যারা অবজ্ঞা, অবমাননা করে এবং এরকম মনোভাব লালন করে তাদের প্রতি প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের মানসিকতা হবে উদার, একটি নির্দিষ্ট পশ্চিমা সংস্কৃতিকে অনুসরণ করে বাংলাদেশের অন্য সব সংস্কৃতিকে অবমাননা করার কোনও অধিকার তার নেই। পশ্চিমা সংস্কৃতিকে সে একজন মানুষের যোগ্যতা দক্ষতার পরিচায়ক মনে করছে, আসলে কিন্তু সেটি অবান্তর ছাড়া কিছুই নয়।’
সহ-দফতর সম্পাদক জান্নাতুল নুসরাত আদন বলেন, ‘আজকের প্রতিবাদ শুধুমাত্র একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে নয় বরং এমন একটি মানসিকতার বিরুদ্ধে- যে মানসিকতা শিক্ষকতার মতো পেশায় থাকার পরও একজন ব্যক্তিকে একটি বিদ্বেষী বার্তা প্রচারে সহায়তা করে। একজন শিক্ষক সমাজে আলো ছড়ান, আমাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু এমন একজন মানুষের কাছ থেকে যদি আমরা এরকম বিদ্বেষী একটি বার্তা পাই, সেটি পুরো সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্নের বার্তা দেয়।’
চাকসুর সহ-ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা বলেন, ‘তিনি পোশাকের স্বাধীনতা চেয়েছেন, কিন্তু একজন নারী হিজাব পরে এলে সেটি মানতে পারেন না। এরকম দ্বিচারিতামূলক আচরণ একটি প্রতিষ্ঠানে কখনও ভারসাম্য বজায় রাখে না। আপনাদের স্বাধীনতার মানে যদি হয় পশ্চিমা সংস্কৃতিকে প্রমোট করা, অন্যের ধর্মকে কটাক্ষ করা, হিজাবকে কটাক্ষ করা ও নারীবিদ্বেষী আচরণ করা তাহলে সেই স্বাধীনতাকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি।’
এর আগে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন তার ফেসবুকে রাকসু হল সংসদের নারীদের শপথ গ্রহণের ছবি দিয়ে লেখেন, ‘এই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আমি এন্ডোর্স করছি। কাল আমি এরকম ব্যক্তিগত স্বাধীনতা পরে ও হাতে নিয়ে ক্লাসে যাবো। পরবো টু-কোয়ার্টার, আর হাতে থাকবে মদের বোতল। মদ তো ড্রাগ না! মদ পান করার লাইসেন্সও আমার আছে! শিবির আইসেন, সাংবাদিকরাও আইসেন!’
তার এই পোস্টের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। যদিও এখন তার ওয়ালে পোস্টটি দেখা যাচ্ছে না।

















