সিলেট জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলমের আশ্বাসে পাঁচ ঘণ্টা পর সিলেটে ডাকা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ সময় আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, সিলেটের প্রতিটি সমস্যা সম্পর্কে তিনি অবগত। গত ৫/৭ বছর কোনও উন্নয়ন কাজ না হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ। যে কারণে এ অঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে আছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হবে। পাশাপাশি এ মহাসড়কের সঙ্গে সিলেট নগরীর সংযোগ স্থাপন করা হবে। রেল ও বিমান যোগাযোগের বিদ্যমান সমস্যাবলী সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
সড়ক ও রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য দূর এবং বিমান ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবিতে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে রবিবার (২ নভেম্বর) বেলা ১১টায় সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট পর্যন্ত এ কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচি চলাকালে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তালা দিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। বিকাল ৪টায় জেলা প্রশাসক অবস্থান কর্মসূচিস্থলে এসে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে আরিফুল হক চৌধুরী অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে আরিফুল হক চৌধুরী দেশের অন্য জেলার প্রকল্প পাস হলেও সিলেটের কোনও প্রকল্প আলোর মুখ দেখে না বলে অভিযোগ করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল সিটিতে ২৪০০ কোটি, চট্টগ্রামে ৩১০০ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হলেও সিলেটের ১৯০০ কোটি টাকার প্রকল্প ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কাটছাঁট করে প্রকল্প জমা দিতে।
এ প্রসঙ্গে আরিফুল হক বলেন, আমরা জানতে চাই, কারা সিলেট বিদ্বেষী। বিগত ১৭ বছর সিলেট বৈষম্যের শিকার- এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে সিলেটবাসী বৈষম্যের শিকার হতে পারে না।
রেল যোগাযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সিলেটের জন্য পর্যটন ট্রেন চালুর বিষয়টি আজও উপেক্ষিত। সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার রেলপথে দুটি নতুন ট্রেন চালুর বিষয়টি ঝুলে আছে। ৫ বছরে সিলেটে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের পদক্ষেপ নেই। হযরত শাহজালাল (র) এর মাটি বার বার বৈষম্যের শিকার হবে তা মেনে নেওয়া হবে না।
আরিফুল হক বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে সিলেট বিভাগজুড়ে অবরোধ করা হবে। এ আন্দোলনের সঙ্গে প্রবাসীরাও সম্পৃক্ত হবেন বলে জানান তিনি।
সিলেটের ন্যায্য দাবি আদায়ে গঠিত ‘সিলেট আন্দোলন’-এর ব্যানারে পালন করা হয় এ কর্মসূচি। নবগঠিত সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী। অবস্থান কর্মসূচিতে আলেম-উলামা, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যোগ দিয়েছেন। এতে সভাপতিত্ব দরগাহে হযরত শাহজালাল (র.) জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা আজাদ আহমদের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেৃতৃবৃন্দ।
অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে নবগঠিত এ সংগঠনের প্রধান আরিফুল হক চৌধুরী গত কয়েকদিন ধরে নগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ করেন। এ ছাড়া কর্মসূচির সমর্থনে শনিবার রাতে নগরীতে মশাল মিছিল বের করা হয়।

















