Swadhin News Logo
সোমবার , ৩ নভেম্বর ২০২৫ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

ছয় বছরের অদ্ভুত অন্তর্ধান শেষে জীবনের অবসান, কে এই আবদুল আহাদ?

প্রতিবেদক
Nirob
নভেম্বর ৩, ২০২৫ ২:৪০ পূর্বাহ্ণ
ছয় বছরের অদ্ভুত অন্তর্ধান শেষে জীবনের অবসান, কে এই আবদুল আহাদ?

ফেনীর ছাগলনাইয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এক অজ্ঞাত মরদেহ পড়ে ছিল । পুলিশ এসে নিয়ে যায় মরদেহ। পরে জানা গেল, মৃত ব্যক্তি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার দাউদপুর গ্রামের আবদুল আহাদ (৪৬)। কিন্তু এখানেই শুরু হয় রহস্য। তিনি কি সত্যিই কাস্টমস কর্মকর্তা ছিলেন, নাকি ফেনীর রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো এক সাধারণ দিনমজুর? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তার পরিচয় নিয়ে।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে স্থানীয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে একজনকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মরদেহে দৃশ্যমান কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তার ব্যাগে পাওয়া যায় কিছু ফল, কিছু পুরোনো জামাকাপড়, আর একটি ব্যাংক কার্ড—যা থেকেই শুরু হয় পরিচয় অনুসন্ধান।

ফেনী পিবিআইয়ের পরিদর্শক পুলক বড়ুয়া বলেন,“প্রথমে আমরা তাকে অজ্ঞাত মরদেহ হিসেবে ধরেছিলাম। পরে আঙুলের ছাপ ও ব্যাংক তথ্যের মিল পাওয়ার পর নিশ্চিত হই—তিনি মৌলভীবাজারের আবদুল আহাদ।”

তিন পরিচয়ে এক জীবন

পরিবার বলছে, আহাদ ছিলেন একজন কাস্টমস কর্মকর্তা, যাকে ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম থেকে অপহরণ করা হয়। কিন্তু ফেনীর স্থানীয়রা বলছেন, তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন, অনেকে আবার তাকে ফল বিক্রেতা হিসেবেও চিনতেন। আর সরকারি রেকর্ড বলছে—বাংলাদেশ কাস্টমসের নথিতে “আবদুল আহাদ” নামে কোনও কর্মকর্তা নেই।

একজন কাস্টমস কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এই নামে আমাদের দফতরে কেউ কখনও চাকরি করেছেন বলে কোনও তথ্য পাইনি। সম্ভবত তিনি নিজের পরিচয় পরিবর্তন করেছিলেন।”

নিখোঁজ, না অপহরণ?

পরিবারের ভাষ্য, ২০১৯ সালের মে মাসে আহাদকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করে, এবং ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠানোও হয়। তবে তখন সিলেট থানায় করা জিডিতে ‘অপহরণ’ শব্দটি নেই, আর পাঁচ মাস পর জামালপুরে করা মামলায় সময়, স্থান, এমনকি আহাদের পেশাও ভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তদন্তে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, “একই ঘটনার তিনটি সংস্করণ পাওয়া গেছে—এটা ইঙ্গিত দিচ্ছে, পরিবার নিজেরাই জানত না তিনি কোথায়, কীভাবে জীবন কাটাচ্ছিলেন।”

ফেনীতে গোপন জীবন

ছাগলনাইয়া থানার এসআই মো. শাহ আলম বলেন,“স্থানীয়দের অনেকে বলেছেন, আহাদ দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। মাঝে মাঝে থানা রোডের এক মার্কেটের বারান্দায় ঘুমাতেন। তার ২০২১ সালে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেখা ছিল—পেশা: ফল বিক্রেতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা: দ্বিতীয় শ্রেণি পাস। শেষবার লেনদেন হয় ২০২৫ সালের মে মাসে।”

মৃত্যুর পরও অমীমাংসিত প্রশ্ন

সব তথ্য ঘেঁটে এখনও উত্তর মিলছে না—২০১৯ সালে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তি আর ফেনীর দিনমজুর কি একই মানুষ?যদি হন, তাহলে ছয় বছর তিনি কোথায় ছিলেন, কীভাবে বেঁচে ছিলেন? ফেনীতে তিনি কেন নিজের পরিচয় গোপন করলেন? আর তার মৃত্যু কি প্রাকৃতিক, নাকি কারও নীরব পরিকল্পনার ফল?

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক