কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিনকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। আমিন-উর-রশিদকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভের পাশাপাশি মশাল জ্বালিয়ে নগরে মিছিল করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর আমিন-উর-রশিদের অনুসারী কয়েকশ নেতাকর্মী নগরের ধর্মসাগরপাড়ের দলীয় কার্যালয় থেকে মশালমিছিল বের করেন। তারা মশাল ও ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে নগরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করেন। শেষে কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে গিয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ‘অবৈধ প্রার্থী, মানি না মানবো না’, ‘আমি কে তুমি কে, ইয়াছিন ভাই ইয়াছিন ভাই’, ‘জেল জুলুম কারাগারে ইয়াছিন ভাই, আমরা সবাই তাকে চাই’, ‘নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে ইয়াছিন ভাই, ইয়াছিন ভাই’—এমন স্লোগানে দিতে থাকেন অনুসারীরা।
সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল হক চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়। প্রতিবাদে সোমবার রাত ১০টার দিকে নগরের কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর এলাকায় প্রথমে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন আমিন-উর-রশিদের অনুসারী বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচরে গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেখানেও টায়ার জ্বালিয়ে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন তারা। আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করছেন নেতাকর্মীরা।
নেতাকর্মীদের দাবি, কুমিল্লা-৬ আসনে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিকে আগলে ধরে রাখা ত্যাগী নেতা আমিন-উর-রশিদকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে। এই আসনে তার বিকল্প কেউ প্রার্থী হলে সেটা কখনোই মেনে নেবেন না নেতাকর্মীরা।
দুই দশক ধরে কুমিল্লা সদরের বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমিন-উর-রশিদ। আর যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, ২০১৮ সালে তিনি কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণের চূড়ান্ত তালিকায় কুমিল্লা-১০ আসনের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলাকে কুমিল্লা-৬ (সিটি করপোরেশন, আদর্শ সদর উপজেলা ও সেনানিবাস এলাকা) আসনে যুক্ত করা হয়। সীমানা পুনর্নির্ধারণের পর থেকে কুমিল্লা-৬ আসনে কাজ শুরু করেন মনোনয়ন পাওয়া মনিরুল হক চৌধুরী।
অপরদিকে ২০১৮ সালে কুমিল্লা-৬ আসনে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন আমিন-উর-রশিদ। দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা সদরে নেতৃত্ব দেওয়া আমিন-উর-রশিদকে বাদ দিয়ে মনিরুল হক চৌধুরীকে এই আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করার বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি উচ্ছ্বাস ও আনন্দ প্রকাশ করছেন মনিরুল হক চৌধুরীর অনুসারীরা।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমিন-উর-রশির ইয়াছিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তার নেতাকর্মীরা নগরে মশালমিছিল করেছেন। তারা কিছুক্ষণ আগে মিছিল করে চলে গেছেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’












