আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে ‘মামলা বাণিজ্যের কল রেকর্ড’ প্রকাশের পর সমালোচনার মুখে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ফেনীর আজিজুর রহমান রিজভীকে সাময়িক অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার সংগঠনটির দফতর সেলের সদস্য সাদিয়া ফারজানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। পাশাপাশি কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, তিন কার্যদিবসের মধ্যে এর কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আজিজুর রহমান রিজভীর বিরুদ্ধে গুরুতর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের একটি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এবং ওই ঘটনায় তার আচরণ সংগঠনের নীতিবিরুদ্ধ বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এ অবস্থায় তাকে দলের সব দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হলো। একইসঙ্গে তাকে কেন দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না; আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তার যথাযথ ব্যাখ্যা শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আব্দুল্লাহ আল-আমিন বরাবর দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।
এর আগে শনিবার রাতে সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের একটি ফেসবুক পোস্টে এনসিপি নেতা রিজভীর সঙ্গে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজুর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কথোপকথনের কল রেকর্ড প্রকাশ করেন। এতে রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়। প্রকাশিত কল রেকর্ডসহ পোস্ট ঘিরে ব্যাপক সমালোচনার পর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংগঠনটির একটি সূত্র জানিয়েছে।
সায়ের তার পোস্টে উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় ২০২৫ সালের ৫ মে রাতে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু গ্রেফতার হন। সাজু ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক মামলার আসামি এবং জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাজুকে কারামুক্ত করার বিষয়ে রিজভীর সঙ্গে মোহাম্মদ মমিন নামে এক ব্যক্তির কথোপকথন হয়। ওই কল রেকর্ডে সাজুকে সাতটি মামলায় ফাঁসানোর কথা বলতে শোনা যায় রিজভীকে। কথোপকথনের একপর্যায়ে তিনি আরও বলেন, ‘ও চাইলে আমাকে এক কোটি, দুই কোটি টাকাও দিতে পারে—৩০ লাখ টাকার গল্প কেন ছড়ায়।’ কল রেকর্ড প্রকাশের পর আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ বিষয়ে আজিজুর রহমান রিজভী বলেন, ‘একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর পর বিষয়টি আমার পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়। কেন্দ্রীয় কমিটি আমাকে চার দিনের জন্য শোকজ করেন। এ সময় আমি আমার বক্তব্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবহিত করি। কেন্দ্রীয় কমিটি আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমাকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছেন। আমি কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত নই।’
