নানা অনিয়মের অভিযোগে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোগীদের টিকিট কাটা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণে টাকা লেনদেন, চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে এ অভিযান চালানো হয়।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-২-এর সহকারী পরিচালক আরিফ আহমেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ অভিযান চালান। সাদা পোশাকে রোগী সেজে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সেবা কার্যক্রমও পরিদর্শন করেন তারা।
অভিযানকালে দুদকের দল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদ আল হাসানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ও চিকিৎসককে হাসপাতালে অনুপস্থিত পান। তবে রোগীদের টিকিট কাটা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনও অনিয়ম পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক আরিফ আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগ ছিল টিকিট কাটার সময় টাকা নেওয়া হয়, ওষুধ বিতরণে টাকা নেওয়া হয়, পাশাপাশি এখানের কনসালট্যান্ট, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কর্মরতরা অনুপস্থিত থাকেন, ওয়াশরুমগুলো নোংরা থাকে—এমন অভিযোগও ছিল। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অনুপস্থিত পেয়েছি। তবে তিনি জানিয়েছেন, ডিজি অফিসে মিটিংয়ে আছেন। আরও কয়েকজনকে অনুপস্থিত পেয়েছি, তাদের বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা আমরা নিয়েছি। টিকিট কাটা ও ওষুধ বিতরণে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি নিজে রোগী সেজে দেখেছি। সেক্ষেত্রে তেমন কোনও অনিয়ম পাইনি। তবে হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে আমরা খুবই অসন্তুষ্ট। বিষয়টি এখানকার আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকেও টেলিফোনে বলেছি। এখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অবস্থা খুবই খারাপ।’
হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছি সরকারিভাবে গেজেটে দুদিন নির্ধারিত আছে। তবে এখানে একদিন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও তৎপর হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালে রোগীদের খাদ্যের মান সম্পর্কেও খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত আমাদের লোকবলের সংকট আছে। আউটডোরে প্রচুর রোগীর চাপ থাকে। তবে ব্যবহারকারী যারা আছেন, তারা টয়লেট ব্যবহারের পর পর্যাপ্ত পানি ব্যবহার করেন না। তবু আমাদের ক্লিনারদের আমরা সম্প্রতি শোকজ করেছি। ইনডোর নিয়ে দুদক কর্মকর্তারা মোটামুটি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আমাদের দুজন আয়া আছেন, দুজনই অবসরের দ্বারপ্রান্তে। তারপরও আমরা চেষ্টা করবো এই জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ সেবার দেওয়ার।’

















