নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জমি দখলের সংবাদ করতে যাওয়ায় তিন সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় বিএনপি নেতাসহ দুজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেনকে (৬০) কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদির তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানো আসামি হলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইয়ুম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ শেষ সময়ে আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়। সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তবে রিমান্ড শুনানি হয়নি। আদালতের নির্দেশে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী রবিবার রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’
এর আগে বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকালে ফতুল্লার গিরিধারা বউবাজার এলাকায় শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সাংবাদিককে মারধরের ঘটনা ঘটে। মারধরে আহতরা হলেন- জাগো নিউজের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি মো. আকাশ, স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজ নারায়ণগঞ্জ’র ক্যামেরাপারসন আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আয়াজ রেজা আরজু। তাদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট (খানপুর) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া শাহাদাত হোসেন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আতা-ই-রাব্বির বাবা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. আকাশ বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন ও তার সহযোগী সায়েদাবাদী সহিদকে (৫৫) আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আহত সাংবাদিক আকাশ বলেন, ওই এলাকার এক নারীর অভিযোগ ছিল তাদের জমি দখল করে রেখেছিলেন শাহাদাত ও তার ছেলে রাব্বি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী ফতুল্লা থানায় একাধিকবার অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে বুধবার বিকালে ঘটনাস্থলে যাই আমরা। সেখানে গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলার খবর পেয়ে শাহাদাত তার লোকজন নিয়ে সেখানে এসে আমাদের ওপর হামলা চালান। এ সময় আমাকে ও আমার সঙ্গে থাকা ক্যামেরাপারসন আব্দুল্লাহ আল মামুন ও আয়াজকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে আমাদের টেনে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়। সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে আমাদের সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করেন তারা। পরে পুলিশ গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ ঘটনায় দুজন নামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত শাহাদাতের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আগামী রবিবার রিমান্ড শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। অপর আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।’

















