দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাকের নাম বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন দলটির উপজেলা নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে বিরল উপজেলা শহরের বকুলতলা মোড়ে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও মনোনয়ন বঞ্চিত মোজাহারুল ইসলাম, আ ন ম বজলুর রশিদ কালু, অধ্যাপক মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচিতে বিএনপির বিরল উপজেলার বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সহস্রাধিক স্থানীয় অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, দিনাজপুর-২ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাদিক রিয়াজ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। সাদিক রিয়াজ চৌধুরী ওই আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন এবং সম্পর্কে ভাতিজা। আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাদিক রিয়াজ চৌধুরীর নামে কোনও মামলা হয়নি ঘনিষ্ঠতা থাকার কারণে। খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে পালিয়ে যেতেও সহায়তা করেছেন তিনি।
এ ছাড়াও সাদিক রিয়াজ চৌধুরী দিনাজপুর-২ আসনে তার নাম ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে যান তিনি। বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে সাদিক রিয়াজ চৌধুরীর কোনও সুসম্পর্ক নেই বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এই আসনের মনোনয়ন বঞ্চিতরা বলেন, এই আসনের বিরল উপজেলার ভোটার সংখ্যা বেশি। এলাকার মানুষের দাবি, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন সাদিক রিয়াজ চৌধুরীর প্রার্থীতা পরিবর্তন করা হোক। আমরা ৩ জন একত্রিত হয়ে তাদের সঙ্গে সম্মতি প্রকাশ করেছি। এই আসনে জিততে হলে বিকল্প প্রার্থী অবশ্যই দরকার।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, এই আসনে সাদিক রিয়াজ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। আমাদের মধ্যে এই সমঝোতা ছিল যে যাকেই প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হবে বিএনপির নেতাকর্মীরা সবাই তার প্রতি সমর্থন দিয়ে কাজ করবেন। কিন্তু এই এলাকার মানুষ- যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাকে চাচ্ছেন না। এই আসনে এমন একজন প্রার্থী দরকার যার প্রতি কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই কাজ করবেন। দলের হাইকমান্ডের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে আবারও এখানে জরিপ করে, সত্যতা যাচাই করে সবাই যাকে চান এমন একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। আমি সতীশ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম মনোনয়ন পাওয়ার দেড় থেকে দুই মাস আগে। তিনি অসুস্থ এবং আমার বাবার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন, এ জন্য তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমার বাবা এমপি ছিলেন, আমি যেহেতু রাজনীতি করি আমার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে গিয়েছি। এটাই তো রাজনীতির সৌন্দর্য। আমার সবার ভোট প্রয়োজন আছে। খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক নাই, কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আমাকে নির্বাচন করতে দেয়নি, নানাভাবে হয়রানি করেছেন, মামলা দিয়েছেন। তার সাথে আমার সম্পর্ক থাকে কীভাবে? আমাকে আমার নেতা তারেক রহমান মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি কাজ করছি। যারা আমার বিরুদ্ধে নেমেছেন তারা দলের সিদ্ধান্ত মানছেন না।

















