বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখার প্রধান ফটকের সাইনবোর্ডে আগুন দিয়েছে দুই ব্যক্তি। তবে তাদের এখনও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। শনিবার রাতে উপজেলার গাড়িদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে সাইনবোর্ডটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ব্যাংকের কোনও ক্ষতি হয়নি।
পুলিশ জানায়, মোটরসাইকেলে এসে রাত ৩টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে দুজন ব্যক্তি ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তাদের শনাক্ত করা যায়নি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আগুন নিভে যায়। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের গাড়িদহ ইউনিয়ন বাসস্ট্যান্ডের পাশে গ্রামীণ ব্যাংকের এই শাখার অবস্থান। অগ্নিসংযোগের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি জানতে পারেন। ভিডিওটি দেখার পর অনেকেই ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পরে পুলিশও সেখানে যায়।
শেরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাতে দুজন ব্যক্তি আগুন দিলেও ব্যাংকের কোনও ক্ষতি হয়নি। রবিবার বিকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে ব্যাংকের কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো ব্যাংকের কার্যক্রম শেষে রাতে শাখার দোতলায় অবস্থান করছিলাম। সেখানে থাকি আমি। অফিসে কোনও সিসিটিভি নেই। রবিবার সকাল ৭টার দিকে ব্যাংকের গেট খুলে দেখতে পাই পাশের গাছ পোড়ানা ও গেটের ওপর সাইনবোর্ডের একপাশে অগ্নিসংযোগের চিহ্ন। আগুন দেওয়ায় ঝলসে গেছে। পরে ফেসবুকে আগুনের ভিডিও দেখেছি।’
ব্যাংকের ওই শাখার নৈশপ্রহরী মজিবর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি অফিসের ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সুযোগে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।’
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পেট্রোল পুড়ে গেলে আগুন নিভে যায়। পাশের ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, দুই ব্যক্তি মোটরসাইকেলে এসে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু কুয়াশার কারণে তাদের চেহারা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে না।
অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে সকাল ৮টার দিকে শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাতে দুর্বৃৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের শাখার প্রধান ফটকের সাইনবোর্ডে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছিল। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, ‘আতঙ্ক ছড়াতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছিল। আগুন দেওয়ার পর আবার তারাই ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে প্লাস্টিকের দুটি খালি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বোতলগুলো দাহ্য পদার্থ বহনে ব্যবহার করা হয়েছিল। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, ‘মধ্যরাতে নাশকতার উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে এতে কোনও ক্ষতি হয়নি। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

















