লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের পশ্চিম লতিফপুর এলাকায় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম জহিরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফয়েজুল আজীম নোমান।
তিনি জানান, রবিবার ভোররাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। তারা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তারা হলেন- লতিফপুর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে ইমন হোসেন (২১), মমিন উল্যাহর ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০) ও নুরুল আমিনের ছেলে হুসাইন কবির সেলিম (৫০)।
তবে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে পারিবারিক কবরস্থানে আবুল কালামকে দাফন করা হয়। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নিহত আবুল কালাম চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পুলিশের ধারণা, আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চন্দ্রগঞ্জের মোস্তফার দোকান এলাকায় তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। খুনের ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে কালামের পরিবার। এর মধ্যেই রাত ৯টার দিকে অভিযুক্ত ওই ছাত্রদল কর্মী ক্রিকেট খেলার একটি ভিডিও পোস্ট করেন তার ফেসবুক আইডিতে। ভিডিওটি পোস্ট দিয়ে ফেসবুকে তিনি লেখেন ‘আউট’। তার এই পোস্ট হত্যাকাণ্ডকে ইঙ্গিত করেই দেওয়া বলে অভিযোগ কালামের পরিবারের।
অভিযুক্ত কাউছার হোসেন স্থানীয় ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয়। তবে কোনও পদ নেই। এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি একটি হত্যা মামলার আসামি। এ ছাড়া ছাত্রদল কর্মী কাউছারের সঙ্গে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ ছিল আবুল কালামের।
পুলিশ বলছে, আবুল কালামের বিরুদ্ধে ছয়টি মাদকের মামলাসহ সাতটি মামলা ও একাধিক জিডি রয়েছে। অভিযুক্ত কাউছারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
খুনের ঘটনার পরপরই কাউছার এ ঘটনায় জড়িত বলে দাবি করেন নিহত কালামের স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে খুন হওয়ার পর কাউছারের পোস্ট করা ভিডিওটি কাকতালীয় নয়। এটি হত্যার ঘটনাকে ইঙ্গিত করেই দেওয়া হয়েছে।’
ওসি ফয়েজুল আজীম বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে কাউছার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার আউট লেখা ভিডিওটি পুলিশের নজরে এসেছে। চার-পাঁচ জন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

















