জুলাই আন্দোলনের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছুরিকাঘাতে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের আগরপুর স্টিলব্রিজ এলাকায় ঘটনা ঘটে। নিহত ছাত্রদল নেতার নাম রবিউল ইসলাম (৩০)। তিনি বাবুগঞ্জের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি ছিলেন। বাবুগঞ্জের আগরপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিকালে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় মিষ্টি বিতরণ করছিলেন। এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রবিউল ইসলাম এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. আউয়াল হাওলাদার, মো. রাসেল ও মো. শাকিলের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে একই ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আউয়াল হাওলাদার ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলামের ওপর হামলা চালান। হামলার সময় ধারালো ছুরি দিয়ে রবিউল ইসলামকে কুপিয়ে ও আঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত আউয়াল হাওলাদার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী।
জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পলাশ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার জন্মদিন এবং শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় দেওয়ার খুশিতে কেক কাটা এবং মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে পূর্বশত্রুতার জেরে দলের কোনও পদে না থাকা আউয়াল, আমির খান, ফিরোজ চৌকিদার, এমদাদুল, শাহিন ফরাজী ও শাকিলসহ ১০-১২ জন হামলা চালান রবিউলের ওপর। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রবিউলকে কুপিয়ে জখম করেন। এতে মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আরও পাঁচ জন আহত হন।’
জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান হিমু বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণায় ছাত্রদলের কয়েকজন মিষ্টি বিতরণ করেন। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলে রবিউলকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়।’
বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাওয়া না-পাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ ও এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করবে রবিউলের পরিবার। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

















