বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে কক্সবাজারের টেকনাফের একটি ট্রলারসহ ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা। মঙ্গলবার সকালে সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপের পূর্ব দিকে এ ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী ঘাট বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথ সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপের কাছাকাছি থেকে একটি ট্রলারসহ ছয় জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে। এ ছাড়া আরও কয়েকজন জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পাচ্ছি, তবে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলারের মালিক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার ট্রলার নিয়ে গত ১৫ নভেম্বর আব্দুর করিম মাঝিসহ ছয় জেলে সাগরে মাছ শিকারে যান। সর্বশেষ আজ ১৮ নভেম্বর সকালে টেকনাফে ঘাটে ফেরার পথে সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপের কাছাকাছি পৌঁছালে ট্রলারটি ধাওয়া করে ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি।’
এদিকে, মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানায়, গত ২৮ অক্টোবর আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা ইউনিট সমুদ্রপথে টহল জোরদার করে। টহলের সময় আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরতে থাকা কয়েকটি বাংলাদেশি ট্রলার শনাক্ত করা হয়। সেখানে তারা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত আনুমানিক ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে এবং ৩০টি নৌকা আটক করে। পরবর্তী সময়ে সেগুলো মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন আইন অমান্য করার কারণ ফের এসব ট্রলার ধরা হচ্ছে। এ ছাড়া আজ ১৬ জেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘ট্রলারসহ কিছু জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টির খোঁজখবর নিচ্ছি।’
বিজিবি বলছে, গত ১১ মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদসহ সংলগ্ন এলাকা থেকে কমপক্ষে ৩৫০ জন জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় তাদের মধ্যে আনুমানিক ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়। এখনও ১৫০ জেলে আরাকান আর্মির হাতে রয়েছে। যার ফলে অনেক জেলে সাগরে মাছ শিকারে যেতে ভয় পাচ্ছেন।

















