বঙ্গোপসাগর থেকে ফেরার পথে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিনের পূর্বে তিনটি মাছ ধরার ট্রলারসহ আটক ২১ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলেসহ আটক ট্রলার তিনটি ছেড়ে দেয় তারা।
এর আগে একইদিন বিকাল ৩টার দিকে সাগরে মাছ শিকার শেষে টেকনাফ ফেরার পথে ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তবে জেলেদের মাছ ও জাল লুটের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিটির পরিচালক সাজেদ আহমেদ সাজেদ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ঘাটের মাছ ধরতে যাওয়া তিনটি ট্রলারসহ ২১ জেলেকে চার ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে। জেলেরা ঘাটে ফিরলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।’
বোট মালিকরা বলেন, ‘দীর্ঘদিন সরকারি বন্ধ এবং বৈরী আবহাওয়ার শেষে সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত টেকনাফ পৌরসভাস্থল কায়ুকখালী ঘাট থেকে অর্ধশতাধিক মাছ ধরার বোট সাগরে মাছ শিকারে বের হয়। এর মধ্যে মাছ শিকার শেষে বুধবার বিকালে টেকনাফ ঘাটে ফেরার পথে সেন্টমার্টিনের অদূরে মেরুল্ল্যা নামক এলাকায় সাগরে আয়ুব মাঝি, আবদুল হামিদ মাঝি এবং নুরু মাঝিদের ধাওয়া করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তিনটি বোটসহ ২১ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি (মগরা)। চার ঘণ্টা পর ট্রলার তিনটি ছেড়ে দিলেও ট্রলারে থাকা মাছ-জাল লুট করে তারা।’
মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘আরাকান আর্মি জেলেদের মাছ-জাল লুট করেছে। এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটলেও স্থায়ী কোনও সমাধান হচ্ছে না। এ কারণে জেলেরা অনিরাপদে রয়েছেন।’
এদিকে, সাগরে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয় ১১ জুন। পরদিনই কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কায়ুকখালী ঘাট থেকে সাগরে যাত্রা করে দুটি ট্রলার। ১৫ জন মাঝিমাল্লাকে নিয়ে যাওয়া ট্রলার দুটি ১৪ জুন সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে ধাওয়া করে ধরে ফেলে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ওই ঘটনার পর থেকে আরাকান আর্মির ভয়ে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখে ওই ঘাটের জেলেরা। এই পরিস্থিতিতে আজ (বুধবার) বিকালে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
বিজিবি বলছে, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমারে নাফ নদসহ সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৩০ জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অপহৃত হন ১৫১ জন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় তাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়।
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারসহ আটক জেলেদের ছেড়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে আরও খোজঁ খবর নেওয়া হচ্ছে।’

















