ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) কর্তৃক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও প্রধান শিক্ষকের অফিসকক্ষ নির্মাণে ধীরগতির কারণে চরম বিপাকে পড়েছে ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বছরের পর বছর পার হলেও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
কালীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি এবং প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) এবং জিএসপির আওতায় ২০২৩/২৪ অর্থবছরে শুরু হওয়া ১১টি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। পিইডিপি-৪-এর আওতায় উপজেলার মনোহরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮০ শতাংশ, চাচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ৯৫ শতাংশ, হেলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন ৬০ শতাংশ, কাকলাশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঊর্ধ্বমুখী অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ ৬০ শতাংশ, বারোবাজার, কোলা বাজার (প্রধান শিক্ষকের অফিসকক্ষ) ও দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যথাক্রমে ৫০/৬০ এবং ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জিএসপির আওতাধীন বেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে ৬০ শতাংশ এবং আড়পাড়া শিবনগর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ অসমাপ্ত থাকায় ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত নির্মাণের সময়সীমা বাড়িয়েছে এলজিইডি বিভাগ।
বেজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাপলা পারভিন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে ধীরগতির কারণে পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একদিকে শ্রেণিকক্ষ সংকট অন্যদিকে নবনির্মিত ভবনের গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণসামগ্রী বারান্দায় ও শ্রেণিকক্ষে ফেলে রাখায় আমাদের নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই আমরা যত দ্রুত সম্ভব নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’
চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকারী ঠিকাদার আশরাফুজ্জামান কালাম বলেন, ‘দুটি ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে আর দুটি ভবনের গাঁথুনির কাজ শেষ হয়েছে। বর্ষার জন্য কাজে দেরি হচ্ছে। তবে যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগের কোনও অন্ত নেই। স্ব স্ব বিদ্যালয়গুলোর কাজের বর্তমান পরিস্থিতি আমি আমার ঊর্ধ্বতনকে জানিয়েছি।’
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সৈয়দ শাহারিয়ার আকাশ বলেন, ‘ফান্ড সমস্যা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বর্ষার কারণে কাজ যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় হস্তান্তর করেছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন হবে এবং সেগুলো হস্তান্তর করতে পারবো।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে আমি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো।’

















