দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরে রেলপথ দিয়ে আগের বছরের চাইতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি কমেছে ২৯ হাজার মেট্রিক টন। ৫ আগস্টের পর বাণিজ্যে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা আর রেলের দুর্বল অবকাঠামোর ফলে এ পরিস্থিতি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ চলছে।
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় একমাত্র বেনাপোল বন্দর দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে রেল ও সড়কপথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে ৫ আগস্টের পর ভারত সরকার বাণিজ্যের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েই চলেছে। ফলে আমদানিকারকরা তাদের অনেক পণ্য সুষ্ঠুভাবে আমদানি করতে পারছেন না। রেলে রফতানি পণ্য পরিবহনের নির্দেশ থাকলেও আজ পর্যন্ত তা চালু করা যায়নি। রেলস্টেশনে নির্মাণ হয়নি কোনও ইয়ার্ড। নানান প্রতিবন্ধকতায় গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত থেকে মাত্র এক হাজার ২৯৬টি ওয়াগানে আমদানি হয়েছে ১২ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। অপরদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেলে আমদানি পণ্যের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার মেট্রিক টন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চাইতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ কমেছে ২৯ হাজার মেট্রিক টন। সংকট কাটিয়ে বাণিজ্য পরিস্থিতি উন্নতিতে দুই দেশের সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, রেলের দুর্বল অবকাঠামোয় পণ্য খালাস ব্যাহত হচ্ছে। পণ্য খালাসের জন্য কোনও ইয়ার্ড রেলস্টেশনে নির্মাণ হয়নি। তিনি আরও জানান, দুই বছর আগে রেলে পণ্য রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন নেই। রেলে রফতানি বাণিজ্য চালু করতে পারলে পণ্য পরিবহনে খরচ আরো সাশ্রয়ী হবে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, বর্তমানে বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞায় ভারত থেকে সুতা, গুঁড়ো দুধ, প্রিন্ট পেপার, পেপার বোর্ড, মাছ ও তামাক আমদানি বন্ধ রয়েছে। রফতানি বন্ধ রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, কাঠের তৈরি আসবাবপত্র ও ফল।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. সাইদুজ্জামান জানান, ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বাণিজ্য কমে এসেছে। দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য রেলস্টেশনে কার্গো ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। রেলে রফতানির বিষয়টি দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে।