ঝালকাঠির রাজাপুরে র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের বাবা তোফাজ্জেল হোসেনকে (৫৫) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার সাতুরিয়া ইঁদুরবাড়ি গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বিকালে রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, তোফাজ্জেল হোসেনদের সঙ্গে প্রতিবেশী ইব্রাহীম হাওলাদার ও আবদুল হাইয়ের বিরোধ আছে। জুমার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হতেই ওই দুই জনসহ চারজন তাকে ঘিরে ধরেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে লিমনের করা অভিযোগ তুলে নিতে বলেন তারা। তোফাজ্জেল হোসেন এতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন ইব্রাহীম ও আবদুল হাই।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সাতুরিয়ায় নিজের বাড়ির পাশে গুলিবিদ্ধ হন লিমন। বাড়ির পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র্যাবের সদস্যরা তাকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। ওই ঘটনার পর র্যাব লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করে। সেই মামলায় র্যাবের পক্ষে ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন ইব্রাহীম হাওলাদার।
শুক্রবারের ঘটনায় লিমনের বাবার লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগে ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল বিরোধপূর্ণ জমিতে প্রবেশ করে ইব্রাহীম ও আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে ছয়-সাতজন বাঁশ কাটার চেষ্টা করেন। এতে তোফাজ্জেল বাধা দিলে তাকে পিটিয়ে আহত করেন আসামিরা। এ ঘটনায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম তাদের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ঝালকাঠির আদালত ইব্রাহীমকে দুই বছরের ও আবদুল হাইকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। ২০২৪ সালে এক মাস কারাভোগ করে ইব্রাহীম হাওলাদার জামিনে বের হয়ে লিমনের পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছেন।
তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার ছেলে লিমন হোসেনের করা অভিযোগ তুলে নিতে অস্বীকার করায় আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। ইব্রাহীম হাওলাদারের নেতৃত্বে এর আগেও আমার ওপর হামলা হয়েছে।’
একই কথা উল্লেখ করে লিমন হোসেন বলেন, ‘আমি এ হামলার বিচার চাই।’
তবে অভিযুক্ত ইব্রাহীম হাওলাদারের দাবি, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লিমন প্রভাব খাটিয়ে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজাপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।