Swadhin News Logo
রবিবার , ২৭ জুলাই ২০২৫ | ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা চালু, মিশ্র প্রতিক্রিয়া

প্রতিবেদক
Nirob
জুলাই ২৭, ২০২৫ ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ
রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা চালু, মিশ্র প্রতিক্রিয়া

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষাপদ্ধতি চালু করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে মৌখিক পরীক্ষায় নির্বাচন করা হবে। এর আগে, শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো।

জানা গেছে, এভাবে মোট তিনটা বিভাগের রিটেন ভাইভা হয়েছে। এগুলো এখনও সিন্ডিকেটে যায়নি। বিভাগ তিনটি হলো সমাজকর্ম, ফার্সি, ইইই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান লিখেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আবেদনকারীকে প্রথমে লিখিত পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রমে বিজ্ঞাপিত পদসংখ্যার তিন গুণ বা তার বেশি আবেদনকারী মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হবে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর এবং মৌখিক পরীক্ষার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

তিনি আরও লিখেছেন, লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বোর্ডের সদস্যবৃন্দ বোর্ডে উপস্থিত হয়ে হাতে লিখে বোর্ডের সভাপতির কাছে জমা দেন এবং সেগুলোর মধ্য থেকে বোর্ডের সভাপতি মাননীয় উপাচার্য প্রশ্ন মডারেশন করে চার/পাঁচটি প্রশ্ন ৪৫/৫০ মিনিট পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করেন। পরীক্ষা শেষে একজন সদস্য উত্তরপত্র কোডিং করেন এবং কোডিংকৃত উত্তরপত্র সকল প্রশ্নকারী তার নিজ প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়ন করেন।

তিনি আরও লিখেছেন, মূল্যায়ন শেষে সকলের নম্বর যোগ করে মেধাক্রম ঠিক করে ডিকোডিং করে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত আবেদনকারীদের রোল নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে আশা করি যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষকতার সুযোগ লাভ করবেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় অনবদ্য ভূমিকা রাখবেন।

উপ-উপাচার্যের এই পোস্টের কমেন্ট সেকশনে নতুন পদ্ধতির প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও করছেন কেউ কেউ। এর মধ্যে রাবির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরও অনেকে রয়েছেন।

পোস্টের কমেন্ট সেকশনে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হক লিখেছেন, আমি এই লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে একমত নই। আমি এর আগেও বলেছি এটা বিভাগের শিক্ষকদের অপমান করার শামিল। বিভাগে এতগুলো কোর্স ভাইভা দিয়ে বিভাগের এতগুলো শিক্ষকের মূল্যায়নে যে ভালো করে সেই সে বিভাগের জন্য যোগ্য। বিভাগের ওপর আস্থা নেই, কী এমন জাদুবলে প্রশাসন লিখিত পরীক্ষায় মেধা যাচাই করবে! এটা দ্রুত বন্ধ করা উচিত। তবে ভাইভা/প্রেজেন্টশন নেওয়া যেতে পারে।

গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. হারুন অর রশিদ লিখেছেন, মাননীয় প্রো-ভিসি স্যার, এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয়? ৫-৬ বছর প্রতিটি অ্যাকাডেমিক পরীক্ষায় যে শিক্ষার্থী তার মেধার স্বাক্ষর রাখলেন, ৪৫ মিনিটের একটা যেনতেন পরীক্ষা নিয়ে সেখানে মেধাবী প্রমাণ করে ফেললেন আপনারা? বরং আপনারা যদি অ্যাকাডেমিক রেজাল্টে ৮০ মার্কস রেখে লিখিত ১০ মার্কস ও ভাইভাতে ১০ মার্কস রেখে মোট ১০০ মার্কসে সিলেকশন দেন সেটাই হবে যথাযথ প্রক্রিয়া।

তিনি আরও লিখেছেন, আপনাদের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সমর্থন করতে পারলাম না। অ্যাকাডেমিক রেজাল্টধারী ও গবেষণায় পারদর্শীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আমি হলফ করে বলতে পারি, যত বড় নামকরা প্রফেসর হউক তাকে লিখিত পরীক্ষায় বসালে সেও পাস করতে পারবে না। কাজেই এই লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে একটা অশুভ প্ল্যানকে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক নওসাজ্জামান লিখেছেন, বর্তমান বেশিরভাগ শিক্ষকের সব থেকে বড় অযোগ্যতা হচ্ছে, আইসিটি রিলেটেড ধারণা কম, প্রেজেন্টেশন সমস্যা; সেগুলোকে প্রায়োরিটি দেওয়া উচিত ছিল। লিখিত পরীক্ষা আল্টিমেটলি কোনও ভালো সিস্টেম না। এখানে স্বজনপ্রীতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি আছে। প্র্যাকটিকাল না হলে এভাবে নিয়োগ দেওয়া আর আগের নিয়োগের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকলো না। যদিও প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার একটা পদ্ধতি এটাও। কিন্তু ভিসি স্যারের বাসভবনে নিয়োগের আগের রাতে এত গাড়ি ঢুকে কেন, এটা তো মিলাতে পারছি না স্যার। নাকি জরুরি গোপন মিটিংয়ের সিস্টেমও নতুন সূচনা?

বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেও উল্লেখ করেছেন কিছু শিক্ষক। ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মতিন লিখেছেন, নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। তবে এটিকে আরও স্বচ্ছ এবং আরও সুন্দর করা যায়। আমার প্রস্তাব, পরীক্ষক প্যানেল বিভাগ থেকে তৈরি করে পরীক্ষার পরে যারা প্রশ্ন করেছেন তাদেরকে বাদ দিয়ে বিভাগ থেকে নির্বাচনি বোর্ড সভাপতি যেকোনও দুজন কিংবা তিন জনকে ডেকে নিয়ে খাতা মূল্যায়ন করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর কাউকে না জানিয়ে শুধু যারা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তাদেরকে ভাইভার জন্য আহ্বান জানানো যেতে পারে। এ ছাড়া যারা পিএইচডি করেছেন এবং উন্নত মানের পাবলিকেশন রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে সরাসরি ভাইভাতে আহ্বান জানানো যেতে পারে যেমনটি আর্মিতে ক্যাডেটদেরকে সরাসরি আইএসএসবিতে কল করা হয়।

সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. জামিরুল ইসলাম লিখেছেন, এটি অবশ্যই অতীতের চেয়ে অনেক ভালো একটি প্রক্রিয়া। তবে আমি রেজাল্টে ১৫; প্রবন্ধ/প্রকাশনায় ১০ মার্কস রেখে লিখিত ২৫ মার্কস; ভাইভাতে ২৫ মার্কস ও ডেমোন্ট্রেশন ক্লাসে ২৫ রেখে মোট ১০০ মার্কসে সিলেকশন দেওয়ার পক্ষপাতী। সেটাই হবে অপেক্ষাকৃত ভালো প্রক্রিয়া। এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হলেও ভালো প্রার্থী পাওয়ার সুযোগ হবে। তবে বর্তমানে যা অনুশীলন করা হচ্ছে, তা অতীতের চেয়ে ভালো। একেবারে ভালো প্রক্রিয়ায় যাওয়া কঠিন। আশা করি প্রশাসন বিবেচনায় নেবে।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক