রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব ও সনদপত্র বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।
তারা হলেন- বিশ্বজিৎ শীল, সাইদুজ্জামান পাপ্পু, জাহাঙ্গীর আলম অপু, মহিউদ্দিন মুন্না, হাসু দেওয়ান,আকিব মাহমুদ, আবির, অন্তু কান্তি দে, জাকির হোসেন ও রিয়াদ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি ড. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে যাদের শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে তাদের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। যারা এখনও অধ্যয়নরত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, র্যাগিংসহ নানান অভিযোগ রয়েছে। তারা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যা সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় অনুমোদিত হয়েছে। আমি গত পরশু তাদের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন পর্যন্ত কোনও কমিটি দেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের ব্যানারে নানান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যেত। বহিষ্কৃত ও সনদ বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজন ৫ আগস্টের আগেই শিক্ষাজীবন শেষ করেছিলেন এবং ৫ আগস্টের পর ক্যাম্পাসে পরীক্ষা বা শ্রেণি কার্যক্রমে আসতে পারেননি কোনও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। পরীক্ষা দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে বেশ কিছুদিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে দেশ ছেড়েছেন কেউ কেউ।
বহিষ্কৃত ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট মাসে এমন কোনও ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটেনি- যে কারণে আমাদের বহিষ্কার করা হতে পারে। ক্যাম্পাসে কোটার দাবিতে একদিন বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে প্রোগ্রাম হয়েছে, সেদিনও কিছু হয়নি। আমরা সম্পূর্ণভাবে ভিসি ও ছাত্রদল-শিবিরের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। একদিন নিশ্চয়ই এই অবিচারের বিচারও হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাদ্দাম হোসেন বলছেন, কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের কিছু বলার নাই। শুধু জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘটনাই নয়, অন্য রাজনৈতিক ঘটনাও আছে অভিযোগে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’