দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানির অনুমতি দেওয়ায় প্রায় চার মাস বন্ধের পর আবারও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। এতে করে দেশের বাজারে চালের দাম কমে আসবে বলে দাবি আমদানিকারকদের। তবে শুল্ক না কমানোয় খুব বেশি চাল আমদানি হবে না বলেও জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকালে ভারত থেকে ৩টি ট্রাকে ১২৫ টন চাল আমদানির মধ্য দিয়ে আবারও বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। নওগাঁর মিঠুন চক্রবর্তী নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এই চাল আমদানি করে।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দিতে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে আবেদন আহ্বান করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। গত ২৩ জুলাই থেকে শুরু করে ৭ আগস্ট পর্যন্ত সেই আবেদন জমা প্রদানের সময়সীমা ছিল। সারা দেশের মতো হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা চাল আমদানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। রবিবার বিকাল ৪টা নাগাদ আমিসহ হিলি স্থলবন্দরের বেশ কয়েকজন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চালের বরাদ্দ পেয়েছি। এরপরই চাল আমদানির অনুমতি বা ইমপোর্ট পারমিট আইপির জন্য আবেদন করেছিলাম। আমদানির অনুমতিপত্র বা আইপি পাওয়ার পর এলসি খুলেছেন যার বিপরীতে আজ বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। আমদানির অনুমতিপ্রাপ্ত আমদানিকারকরা পর্যায়ক্রমে এলসি খুলছেন ফলে আগামীকাল থেকে চাল আমদানি বাড়তে পারে। চাল আমদানির ফলে দেশের বাজারে চালের দাম কমে আসবে। কেজিপ্রতি ৬ থেকে ৮ টাকা করে দাম কমে যাবে। ভালো মানের চিকন জাতের চাল ৬৭ থেকে শুরু করে ৭০ টাকার মধ্যে থাকবে।’ স্বর্ণা জাতের চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকার মধ্যে থাকবে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক দীনেশ পোদ্দার বলেন, ‘বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দিলেও বর্তমানে চালের ওপর ৬২.৫ শতাংশ শুল্ক বিদ্যমান থাকায় বেশি পরিসরে চালের আমদানি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে আমদানিকারকদের মাঝে। ভারত থেকে চাল ক্রয়ের পর পরিবহন খরচ আর বন্দর চার্জ দিয়ে এই পরিমাণ উচ্চ শুল্ক পরিশোধ করে চাল আমদানির পর বাজারজাত করা সম্ভব নয়। দেশের বাজারে যে চালের দাম রয়েছে তারচেয়ে আমদানিকৃত চালের দাম বেশি পড়বে। তাই চাল আমদানি সহজ করতে গতবারের মতো এবারেও একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চালের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের পরামর্শ হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের।’
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধকেন্দ্রের উপসহকারী সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ‘চাল আমদানির অনুমতি (ইমপোর্ট পারমিট) দেওয়ায় আমদানিকারকরা এলসি খুলে আজ চাল আমদানি শুরু করেছেন। আমদানিকৃত চালের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত সনদ প্রদান করা হবে যাতে দ্রুত ছাড়করণ নিতে পারেন।’
প্রসঙ্গত, বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি ছিল না। সেইসঙ্গে চালের ওপর ৬২.৫ ভাগ শুল্ক থাকার ফলে আমদানিতে ভাটা পড়ে। সর্বশেষ বন্দর দিয়ে গত ১৫ এপ্রিল ভারত থেকে চাল আমদানি হয়েছিল। এরপর থেকে সম্পূর্ণরূপে চাল আমদানি বন্ধ থাকে।

















