নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা মোড়ে সিএনজি স্টেশন দখল, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের গাড়িতে হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ দুজনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পাঁচদোনা মোড় এলাকায় সংঘর্ষ চলে। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
গুলিবিদ্ধরা হলেন— পাঁচদোনা এলাকার তাইজুদ্দিনের ছেলে হামিদ মিয়া (২৮) এবং বিল্লাল মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া (২৮)। তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তারা কে কোন গ্রুপের তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর এ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একই ইউনিয়নের শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আলম মিয়া (৫৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার, ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি এবং পাঁচদোনা মোড়ের সিএনজি স্টেশন দখল নিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে বিরোধ শুরু হয় ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি লালু মিয়া ও বিএনপির কর্মী মোসাদ্দেক হোসেনের মধ্যে। এরপর থেকে সংঘর্ষ, হামলা ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে আসছে। সর্বশেষ রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাঁচদোনা মোড়ে ফুটপাতের রাস্তা ও সিএনজি স্টেশন দখলকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে এবং দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষ রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাসান মিয়া বলেন, ‘উভয় গ্রুপের সংঘর্ষের মূল কারণ আধিপত্য বিস্তার। সাবেক ইউপি সদস্য লাল মিয়া মূলত বিএনপি নেতা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর মোসাদ্দেক হয়ে ওঠে হাইব্রিড বিএনপি নেতা। তাদের সংঘর্ষে আরও ৪ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে সংখ্যা বাড়তে পারে।’
তবে বিএনপির কর্মী মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘গত ২ দিনে আমার ৩ জন লোককে লাল মিয়ার লোকজন পিটিয়ে আহত করেছে, আমি কিছু বলি নাই। আজ (রবিবার) সন্ধ্যা ৭টায় একজন কর্মীকে একা পেয়ে মারধর করে। আমরা ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে লাল মিয়ার লোকজন পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালায়। পাকিজা কারখানা থেকে আমরা ঝুট কিনেছি এবং অগ্রিম ১৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু লাল মিয়া ও তার লোকজন আমাদের বাধা দেয় এবং আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমার দুই জন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।’
তবে পাঁচদোনা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি লাল মিয়াকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘রবিবার সন্ধ্যায় তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তারা মুখোমুখি অবস্থান করে। তাদের সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ হচ্ছে আধিপত্য বিস্তার, এলাকা দখল ও নিয়ন্ত্রণ। এই ঘটনায় কোনও পক্ষ এখন পর্যন্ত মামলা করেনি।’

















