পুরান ঢাকায় বংশালের কসাইটুলিতে ভূমিকম্পের সময় পাঁচতলা ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে নিহত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফির (২৩) বগুড়ার বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। তার মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে কাঁদছেন স্বজনরা।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাফির মরদেহ শহরের গোহাইল রোডের সুত্রাপুরের বাসভবনে পৌঁছার পর শনিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাফি বগুড়া শহরের গোহাইল রোডের সুত্রাপুর এলাকার অধ্যক্ষ ওসমান গণি রুস্তম ও নিপা আক্তারের ছেলে। তার বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। বাবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ। মা নিপা আক্তার সন্তানদের নিয়ে পুরান ঢাকার বংশালে ভাড়া বাসায় থাকেন। রাফি বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন।
রাফির চাচা আব্দুস সালাম রুবেল জানান, রাফি ও তার মা শুক্রবার সকালে বাজার করার জন্য কসাইটুলিতে যান। তারা একটি মাংসের দোকানের সামনে ছিলেন। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের পরপরই ভূমিকম্প হয়। এ সময় প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে একটি পাঁচতলা ভবনের রেলিং ভেঙে পড়ে। মাথায় ইট পড়ে
ঘটনাস্থলেই রাফির মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন তার মা নিপা আক্তার। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক রাফিকে মৃত ঘোষণা করেন। মাথায় আঘাত পাওয়ায় নিপা আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জানেন না, তার বুকের ধন রাফি আর নেই।
ঘটনার সময় রাফির বাবা ওসমান গণি বগুড়ার বাড়িতে ছিলেন। খবর পেয়ে ঢাকায় রওনা হন।
এদিকে, রাফির মৃত্যুর সংবাদ বগুড়ায় পৌঁছার পর আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও সহপাঠীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তারা শহরের সুত্রাপুরের বাড়িতে ভিড় করেন।
চাচা আব্দুস সালাম রুবেল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শুক্রবার রাতেই রাফির মরদেহ বাড়িতে পৌঁছবে। শনিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
মৃত রাফি ও তার আহত মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই আমরা।

















